লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্ট থেকে প্রতিবেশি ভারতের ময়নাগুড়ি। গুগল বলছে দূরত্ব মাত্র ৩৩ দশমিক ৬ কিলোমিটার। গাড়িতে যেতে সময় লাগবে মাত্র ৫০ মিনিট।
সেই ময়নগুড়ির চুড়াভান্ডারে বিজেপি আয়োজিত জনসভায় যোগ দিতে আজ, ৮ ফেব্রুয়ারি আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, জলপাইগুড়ি জেলার কোথায় মোদির জনসভা হবে তা নিয়ে শুরু থেকেই ছিল গুঞ্জন। পশ্চিমবঙ্গের শাষকদল তৃণমূলের কৌশলগত বাধায় একাধিক মাঠের আবেদন করেও সভা করার অনুমতি পায়নি বিজেপি।
শেষ পর্যন্ত সভাস্থল হিসেবে বেছে নেয়া হয় ময়নাগুড়ির জাতীয় মহাসড়ক লাগোয়া চুড়াভান্ডারের একটি আবাদি জমিকে।
অবশ্য সেখানে বাধ সেধেছিল তৃণমূল। ওই ধানক্ষেতেই স্থানীয় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ৫ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ‘সম্প্রীতির ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট’ আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের টুর্ণামেন্ট সরিয়ে নেয়া হয়।
কেন ময়নাগুড়ি?
মোদির সভা মঞ্চের পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে ভারতের ২৭ নম্বর জাতীয় সড়ক। এই পথ ধরেই ধূপগুড়ি, শিলিগুড়ি বা আলিপুরদুয়ার যাওয়া যায়। অন্যদিকে চলে গেছে কোচবিহার জেলা।
ভোটের আগে এই কৌশলগত অবস্থানই শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়ি শহরে এড়িয়ে ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারকে বিজেপি বেছে নিয়েছে বলে জানাচ্ছে আনন্দবাজার। কারণ আসন্ন লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে ভালো ফল পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি।
বিজেপি নেতাদের এই কথার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত স্থানীয় মানুষজন। তাঁদের মতে, ময়নাগুড়ি আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও দার্জিলিং জেলা দূরে নয়। ফলে মোদি-মমতা টানাপোড়েনে হয়তো বিজেপি এ সভার মাধ্যমে রাজ্যের উত্তরবঙ্গে নিজেদের অবস্থান অনেক শক্ত করতে পারবে।
বিজেপি এবার আলিপুরদুয়ার জেলার পাশাপাশি জলপাইগুড়ির ডুয়ার্স অঞ্চলের ভোটেও ভাগ বসাতে চাচ্ছে। তাই চূড়াভাণ্ডার থেকে মোদীর বার্তা সহজেই এসব এলাকায় পৌঁছে যাবে বলে ধারণা বিজেপি নেতাদের।
পাশাপাশি মোদির দলের নজর কোচবিহারেরও দিকে, যেখানে এক সময় শক্ত অবস্থানে ছিল তাদের দল।
অপরদিকে চা বাগান ও আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল আলিপুরদুয়ার। সেখানে এখন অনেকটাই শক্ত অবস্থানে বিজেপি। রাজ্য সরকারের সরাসরি প্রকল্পের সুবিধা অধিবাসীদের হাতে পৌঁছে দিয়েও আর এগুতে পারছে না মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তূণমূল। ফলে আলিপুরদুয়ারকে বিশেষ ভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মোদির সভায়।
এবি/০৮.০২.১৯