কারও উস্কানিতে পা না দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্য্য ধরার আহবান জানালেন শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে দলের নেতা-কর্মীদের কারও উস্কানিতে পা না দিয়ে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘জনগণ তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না জেনেই তারা দেশব্যাপী নানা সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা আমাদের নির্বাচনী অফিস পুড়িয়েছে এবং এ পর্যন্ত পাঁচজন নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে’।  বাসস পরিবেশিত খবর সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

তিনি বলেন, ‘জনগণ বিএনপি-জামায়াতকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাঁরা নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ এবং মহাজোটকে জয়যুক্ত করতে চায়। বিএনপি-জামায়াত এই নির্বাচনটাকে নস্যাৎ করতে চায়, বানচাল করতে চায়। তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটাচ্ছে এবং অপবাদ ছড়াচ্ছে’।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার, ২৬ ডিসেম্বর বিকেলে তাঁর ব্যক্তিগত বাসভবন ধানমন্ডীর সুধা সদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কুষ্টিয়া, নওগাঁ এবং চাঁদপুরের নির্বাচনী জনসভায় দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি ওই তিন জেলার আওয়ামী লীগ এবং মহাজোটের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে তাঁদের জন্য জনগণের ভোট চান।


শেখ হাসিনা দলের নেতা-কর্মীসহ সকলকে ধৈর্য্য ধারণের আহবান জানিয়ে আরও বলেন, ‘আমি একটা অনুরোধ করবো সবাইকে। নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। সকলকে এ সময় একটু ধৈর্য্যধারণ করতে হবে। নির্বাচনটা যাতে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে হয় সেজন্য আমাদের সকল নেতা-কর্মীকে সক্রিয় থাকতে হবে’।


তিনি বলেন, ‘যেহেতু বিএনপি’র মানুষ খুন করার অভ্যাস তাই সকলকে আমি বলবো- নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাটাও নিজেদেরই করতে হবে। কারণ এরা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদই জানে, আর কিছু জানে না’।


আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ওরা উস্কাবে, ওদের সন্ত্রাস করা চরিত্র, ওরা সন্ত্রাস করবে কিন্তু আমাদের খুব ধৈর্যধারণ করতে হবে। কারণ আমরা জানি আমরা জয়লাভ করে আবার সরকার গঠন করে জনগণের সেবা করবো’।

তিনি আরও বলেন, ‘তাদের দুর্ব্যবহার (ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপি) থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছে না। তারা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ঝগড়া করছে এবং পুলিশের বিরুদ্ধে এমন বাজে ভাষা ব্যবহার করছে যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না’।


ড. কামাল হোসেনের নাম উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘যিনি একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী হিসেবে পরিচিত, তাঁর কাছ থেকে কেউ এ ধরনের ব্যবহার আশা করে না।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর...

আওয়ামী লীগ সভাপতি বিএনপি’র উদ্দেশ্যে আরও বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধ চায়নি, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল তারাই আজকে এদের দোসর। আর তাদেরই নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমাদের ড. কামাল হোসেন সাহেব। আর সেটা করতে গিয়ে তিনি আমাদের পুলিশ বাহিনীকেও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। যে পুলিশ দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশ থেকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দূর করে মানুষের জীবনে শান্তি এনে দিয়েছে, তাদেরই গালাগালি করা হচ্ছে। আর এই ধরনের কথাবার্তার জন্যই মানুষ তাদেরকে ভোটও দেবে না। মানুষ তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করবে, এতে কোন সন্দেহ নেই’।

শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার মাধ্যমে জনগণকে পুণরায় সেবা করার সুযোগ প্রদানের জন্য আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট প্রত্যাশা করেন।

ছবি : পিআইডি

তিনি বলেন,‘আমরা ইতোমধ্যেই অনেক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে সেগুলি বাস্তবায়ন করেছি এবং অনেকগুলো বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। কাজেই আমি দেশবাসীকে বলবো উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য নৌর্কায় ভোট দিয়ে আমাদেরকে আরেকটি বার দেশসেবার সুযোগ করে দিতে’।


শেখ হাসিনা এ সময় বিএনপি-জামাত জোটকে প্রত্যাখ্যান করার আহবান জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এই দুর্ণীতিবাজ, এতিমের অর্থ আত্মস্যাৎকারী, খুনী এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী, অস্ত্র চোরাকারবারী বিএনপি-জামায়াত জোট, এরা যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। তাই দেশবাসীর কাছে আমার আহবান ৩০ ডিসেম্বর নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে দেশসেবার সুযোগ দেবেন এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবেন’।


শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইনশাল্লাহ আমি বিশ্বাস করি জয় আমাদের হবেই এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে এবং বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো’।

জাতির পিতা আজকে আমাদের মাঝে নেই কিন্তু তাঁর আদর্শ আছে তাঁর সেই আদর্শ বাস্তবায়ন করাই আমাদের লক্ষ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই লক্ষ্য নিয়েই আমরা উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়েছি। প্রতিবার নির্বাচন আসলেই আমরা আমাদের ইশতেহার ঘোষণা দেই এবং তা ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়ন করি’।


আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আগামী ৫ বছর বাংলাদেশকে আমরা কিভাবে গড়ে তুলবো সেই পরিকল্পনার কথা আমাদের এবারের ইশতেহারে রয়েছে’।

এইচএ/২৭.১২.১৮

মতামত দিন