লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে অগ্নিকান্ডে বসতবাড়িসহ সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব বিত্তশালী সেই পরিবার তিনটির আশ্রয় এখন একটি গোয়াল ঘর। সেখানেই শনিবার থেকে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
এদিকে রোববার, ২৮ এপ্রিল ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে দেখতে যান কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ ও ইউএনও রবিউল হাসান। এসময় উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পরিবার তিনটিকে ৯ বান্ডিল টিন ও অর্থ সহায়তা দেয়া হয়।
রোববার সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িটি দেখতে বিভিন্ন এলাকার লোকজন ভীড় করছেন। পরিবারগুলোর অনেক সদস্যকে দেখা যায় কান্নাকাটি করতে। বাড়ির উঠানে থাকা বেড়াবিহীন একটি গরু রাখার ঘর পলিথিন দিয়ে পেঁচিয়ে সেখানেই গাদাগাদি করে অগ্নিকান্ডের পর থেকেই বাস করছেন পরিবারের লোকজন।
শনিবার, ২৭ এপ্রিল বিকালে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে এ অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয় বলে ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। অগ্নিকান্ডে চলবলা ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামের প্রয়াত ছোবাহান হাজীর ছেলে আব্দুল করিম, আব্দুস ছাত্তার ও আব্দুর রহমানের ২২ কক্ষের আধাপাকা বাড়িটি সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তাপদাহের কারনে অগ্নিকান্ডের সময় সাধারণ মানুষ সেখানে ভিড়তে পারেনি, ফলে ক্ষতির পরিমান বেড়েছে। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ ও আদিতমারী ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই আগুনের লেলিহান শিখা পুরো বাড়িটি গ্রাস করে ফেলে। প্রায় আড়াই ঘন্টা চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রনে আনলেও বাড়িটির কোনো জিনিসপত্র রক্ষা করা যায়নি।
ক্ষতিগ্রস্থ আব্দুল করিমের স্ত্রী শরিফা বেগম জানান, বাড়ির বৈদ্যুতিক লাইনে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। মুহুর্তেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরিবারের লোকজন কোনোমতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন।
ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছেন, বাড়িতে থাকা শতাধিক মন তামাক, ধান, চাউল ও নগদ চার লাখ টাকা আংশিক পুড়ে যায়। সবকিছু মিলিয়ে অন্তত ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
এদিকে আধাপোড়া টাকাগুলোর বিষয়ে ব্যাংকের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ইউএনও।
ইউএনও রবিউল হাসান জানান, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার তিনটিকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি পুড়ে যাওয়া টাকার বিষয়ে ব্যাংকের সাথে কথা চলছে।
এইচএ/রাতদিন