মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে ‘দায়সারা’ দায়িত্ব পালন করেছেন উপজেলা প্রশাসন ও শহীদ মিনার উপ কমিটি। ফলে একুশের প্রথর প্রহরে শহীদ স্মরণে ফুল দিতে আসা মানুষ বিড়ম্বনায় পড়েন। এতে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকে।
সরেজমিন দেখা যায়, ধোয়া-মোছা করা হলেও নতুন করে রং না করায় শহীদ মিনারটি যেন বিবর্ন হয়ে পড়েছে। বেদির কোথাও কোথাও প্লাস্টার খসে পড়লেও তা মেরামত হয়নি। এসবের বাইরে যথেষ্ট আলোর ব্যবস্থা করা হয়নি প্রথর প্রহরের জন্য। ফলে শ্রদ্ধা জানাতে আসা হাজারো মানুষ পড়েন আলো স্বল্পতায়।
জানা গেছে, গতকাল শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর শহীদ মিনারের একপাশে একটি লাইট লাগানো হয়। আরেক পাশে থাকা সৌর বিদ্যুতের একটি লাইটের ওপর নির্ভর করা হলেও রাত ১১টার আগেই সেটার আলো কমতে শুরু করে। ফলে প্রথম প্রহরে পুরো শহীদ মিনারটি অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
ফলে সেখানে হাজির বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষকসহ নানা পেশার মানুষের মাঝে শুরু হয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা শিশু, নারী, পুরুষ পড়েন আলো স্বল্পতায়।
এই অবস্থায় উপজেলা প্রশাসন ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ির সহায়তা নেন। সেই গাড়ি শহীদ মিনারের পাশে দাঁড়িয়ে আলো জ্বালিয়ে কিছুটা অন্ধকার দূর করে। আর সেই আলোতেই চলে ভাষা শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর কাজ।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় কালীগঞ্জের ইউএনও মো. রবিউল হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসেন, ওসি আরজু মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের ক্রমানুসার নিয়েও অনেকে ক্ষোভ জানিয়েছেন। শ্রদ্ধা নিবেদন উপ কমিটি অনেকটা নিজেদের মতো করে একেকটি প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করে শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার আহ্বান জানাতে থাকেন। এর প্রতিবাদে একেবারে সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কালীগঞ্জ প্রেসক্লাব শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
প্রথম প্রহরে সেখানে উপস্থিত আ.লীগ নেতা ও ব্যবসায়ী কমলেন্দু রায় মিন্টু বলেন, ‘অত্যন্ত দায়সারাভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের ব্যবস্থা করেছে সংশ্লিষ্টরা। নেই আলো, প্লাস্টার খুলে যাচ্ছে, করা হয়নি রং। এটা হতে পারে না’।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসিন টুলু বলেন, ‘লাইট কম হওয়ায় দেখতে সমস্যা হয়েছে। তবে এটা ঠিক হয়নি’।
শহীদ মিনার উপ কমিটির আহবায়ক ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দা সিফাত জাহান সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই পাশে দুটো লাইট ছিল তাই বাড়তি আলোর ব্যবস্থা করা হয়নি’। এর পর থেকে আর এ ধরণের সমস্যা হবে না’।
ইউএনও রবিউল হাসান জানান, সন্ধ্যার পর আলোর স্বল্পতা চোখে পড়েনি। তবে রাতে আলোর কিছুটা স্বল্পতা ছিল। ভবিষ্যতে বিষয়টি খেয়াল রাখা হবে।
এবি/রাতদিন