দিনভর পরিশ্রমের পর খিদে এবং ক্লান্তিতে বিধ্বস্ত এক চিত্রগ্রাহককে দু’টি বিকল্প দেয়া হয়েছিল। তিনি খেয়ে, বিশ্রাম নিয়ে সময় নষ্ট করতে চান? না কি একজন পেশাদার হিসেবে নিজের কাজটুকু করে সম্মানি নিয়ে বাড়ি ফিরতে চান।
জবাবে এক মুহূর্তও দেরি না করে ওই ফটোগ্রাফার প্রথম বিকল্পটিই বেছে নিয়েছেন। যদিও সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এখন তিনি দোটানায়। নেটমাধ্যমে জানতে চেয়েছেন তার সিদ্ধান্তে ভুল ছিল না তো!
নেটমাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ওই ফটোগ্রাফার। লিখেছেন, তিনি পেশাদার ফটোগ্রাফার নন। শখেই ছবি তোলেন। মূলত কুকুর বা পোষ্য জীবজন্তুর ছবি তুলেছেন এত দিন। তবে কিছু দিন আগে হঠাৎই এক বন্ধু তাকে নিজের বিয়ের ছবি তোলার প্রস্তাব দেন। সেখান থেকেই সমস্যার শুরু।
শখের ফটোতুলিয়ে জানিয়েছেন, প্রথমে ওই প্রস্তাবে রাজি হতে চাননি। এমনকি বন্ধুকে তিনি জানিয়ে দেন, আগে কোনও বিয়ের অনুষ্ঠানে ছবি তোলেননি তাই এ কাজের দায়িত্ব নেয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তারপরও বন্ধু তাকে জোর করতে থাকেন। এমনকি ‘ছবি দেখতে ঠিক ঠাক হলেই হল’ বলে সাহসও জোগান। ওই আলোকচিত্রী জানিয়েছেন, বন্ধুর অনুরোধেই শেষ পর্যন্ত ছবি তুলতে রাজি হন। কিন্তু এখন তিনি আফসোস করছেন।
বিয়েবাড়িতে হওয়া তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে ফটোগ্রাফার লিখেছেন, ‘সকাল ১১টা থেকে কাজ শুরু করেছিলাম। বিকেল ৫টা নাগাদ সবাইকে খাবার দেয়া হয়। কিন্তু আমি দেখলাম আমার জন্য কোনও টেবিলে একটি বসার জায়গাও সংরক্ষণ করা হয়নি।’
ভদ্রতাবশত এর পরও ঘণ্টাখানেক ছবি তোলেন তিনি। তবে দীর্ঘক্ষণ অভুক্ত থাকায় ক্লান্তিতে শারীরিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ‘বন্ধু’র কাছে খাওয়ার জন্য ২০ মিনিটের ছুটি চান তিনি। জবাবে শুনতে হয়, ‘টাকার বিনিময়ে কাজ করছো। হয় পেশাদারের মতো কাজ করে টাকা নিয়ে বাড়ি যাবে। না হলে কাজ ছেড়ে বিশ্রামই নাও।’
সারাদিনের ক্লান্তির পর আর মাথা ঠিক ছিল না ফটোগ্রাফারের। তিনি বন্ধুর সামনে তৎক্ষণাৎ তার বিয়ের তোলা সবক’টি ছবি ডিলিট করে দেন এবং বাড়ি ফিরে যান। তবে রাগের মাথায় করা কাজ ঠিক হয়েছে কি না, সেটা ভেবে তিনি এখন দোটানায়।
নেটমাধ্যমে জানিয়েছেন, তার বন্ধু বিয়ের একটি ছবিও নেটমাধ্যমে দেননি। অনেকে তাদের জিজ্ঞাসাও করছেন ছবির ব্যাপারে। সে সব দেখে অপরাধবোধে ভুগছেন ওই আলোকচিত্রী। জানতে চেয়েছেন, তিনি যা করেছেন, তা ঠিক ছিল কি!
এনএ/ রাতিদন