তখন ইংল্যান্ড ৭১ রানে হারিয়েছে ৩ উইকেট। ব্যাট হাতে নামলেন বেন স্টোকস। অধিনায়ক অইন মর্গ্যান আউট হলে স্কোরবোর্ড দাড়ায় ৮৬-৪। অনেকেই ভাবছেন এই অবস্থা থেকে ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। তবে ইংল্যান্ড ঘুরে দাড়িয়েছে। জন্মভূমি নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছেন বেন স্টোকস। বাবার কর্মজীবনের কারণে যিনি ইংল্যান্ডে বেড়ে ওঠেন আর ক্রিকেট খেলার জন্য ইংলিশ নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন।
আদর্শ বিশ্বকাপ ফাইনাল বোধহয় একেই বলে। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করার ফল দেখিয়ে গেল বেন স্টোকস। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ ওভারে চারটি ছয় হজম করে দেশের খলনায়ক হয়ে উঠেছিল যে অলরাউন্ডার, সে-ই দেশকে প্রথম বিশ্বকাপ তুলে দিল। তবে ইংল্যান্ড জিতলেও হারেনি নিউজ়িল্যান্ড। শুরু থেকে যাদের মধ্যে কোনও সম্ভাবনাই দেখেনি ক্রিকেটবিশ্ব, তারাই আবারও প্রমাণ করে দিল, ক্রিকেট মহান অনিশ্চয়তার খেলা।
এ দিন ভাগ্যও ইংল্যান্ডের সঙ্গেই ছিল। ৪৮.৪ ওভারেই ম্যাচটি শেষ হয়ে যেতে পারত। বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে ক্যাচও নিয়েছিল বোল্ট। কিন্তু শরীরের ভার সামলাতে না পারায় তা ছয় হয়ে যায়। এমনকি শেষ ওভারেও স্টোকস দ্বিতীয় রান সম্পূর্ণ করার সময় ওর হাতে বল লেগে বাউন্ডারির বাইরে চলে যায়। ছ’টি গুরুত্বপূর্ণ রান পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। যা ক্রিকেটের ‘হ্যান্ড অব গড’ হিসেবে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিল।
তবে এই বিশ্বকাপ বেন স্টোকসের। নিউজ়িল্যান্ড বংশোদ্ভূত স্টোকসই সে দেশের প্রথম বিশ্বকাপ জেতার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াল। ইংল্যান্ডের স্বপ্নের নায়ক হয়ে গেল এক সময়ের খলনায়ক। অইন মর্গ্যানের দলের মিডল অর্ডারটা ও-ই ধরে রেখেছিল। স্টোকসের মতো অলরাউন্ডার যে কোনও দলের সৌভাগ্য। তবে আগাগোড়া লড়াই হয়েছে ইংল্যান্ড ব্যাটিং বনাম নিউজ়িল্যান্ড বোলিংয়ের।
সুপার ওভারে বেন স্টোকস ও জস বাটলার যে রকম ব্যাট করেছে, তেমনই একা নিউজ়িল্যান্ডের জিমি নিশাম জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিল। ইংল্যান্ড ১৫ রান করায় বিপক্ষকে ১৬ রান করতেই হত। কারণ, ম্যাচে কিউয়িদের থেকে অনেক বেশি বাউন্ডারি রয়েছে ইংল্যান্ডের। তা জেনেই মরিয়া চেষ্টা করে নিশাম। জোফ্রা আর্চারের দ্বিতীয় বলে অসাধারণ ফ্লিক করে ছয়ও মারে। কিন্তু শেষ বলে গাপ্টিল পারলো না। লেগস্টাম্পের উপরে বল মিড উইকেটে ঠেলে দু’টি রান সংগ্রহ করতে গিয়েই শেষ হয়ে গেল প্রথম বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন। ইংল্যান্ড জিতল বাউন্ডারির নিরিখে।
ঘরের ছেলে বেন স্টোকসের জন্যই হয়তোবা নিউজ়িল্যান্ডের বিশ্বকাপ জেতা হল না।
জেএম/রাতদিন