ত্ব-হাসহ দুই সঙ্গীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর

আলোচিত ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান ও তার ২ সঙ্গীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে আদালতের মাধ্যমে তাদের নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়। মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক কেএম হাফিজুর রহমান এ নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান।

গত ১০ জুন দিবাগত রাত থেকে কোনো খোঁজ মিলছিল না আবু ত্ব-হা, তার দুই সঙ্গী আবু মুহিত আনছারী, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দিনের। সেদিন বিকেল চারটার দিকে ওই তিনজনসহ আবু ত্ব-হা রংপুর থেকে ভাড়া করা একটি গাড়িতে ঢাকার পথে রওনা দেন। রাতে মোবাইল ফোনে সর্বশেষ কথা হলে তিনি সাভারে যাচ্ছেন বলে তার মাকে জানান।

এরপর রাত দুইটা ৩৬ মিনিটে প্রথম স্ত্রী হাবিবা নূরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় ত্ব-হার। তিনি সাভার যাচ্ছেন বলেই জানান স্ত্রীকে। তারপর থেকেই তাদের সকলের ফোন বন্ধ থাকায় আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

পরে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি শেষে তাকে না পেয়ে ১১ জুন বিকেলে রংপুর কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন ত্ব-হার মা আজেদা বেগম এবং আমির উদ্দিনের ভাই। তার খোঁজ চেয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনও করেন ত্ব-হার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন নাহার সারা।

নিখোঁজ হওয়া নিয়ে আলোচনার মধ্যে শুক্রবার ত্ব-হার খোঁজ মেলে। বিপ্লব মিয়া নামে এক প্রতিবেশী জানান, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবু ত্ব-হাকে তার শ্বশুর আজহারুল ইসলাম মন্ডলের বাড়িতে ঢুকতে দেখেন তিনি। পরে খবর পেয়ে বেলা তিনটার দিকে তাকে রংপুর নগরের আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন মাস্টার পাড়ার ওই বাড়ি থেকে ত্ব-হাকে নিয়ে যায় পুলিশ।

উদ্ধারের পর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তাকে রংপুর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে সংবাদ সম্মেলনে রংপুর মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ক্রাইম ডিভিশনের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেন, মা ও ভাইয়ের জিডির সূত্রে আমরা (ত্ব-হার) অনুসন্ধান করতে থাকি। আমরা গোপন সূত্রে জানতে পারি, ত্ব-হা চারতলা মোড়ের পাশে আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন মাস্টার পাড়ায় তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে আছেন। সেই সংবাদ পেয়ে আমরা তাকে নিয়ে আসি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আমরা অপর সঙ্গীদেরও সন্ধান পাই। এরপর গাড়িচালক আমির উদ্দিন ও আবু মুহিত আনছারীকেও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।

তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধায় বন্ধু সিয়ামের বাসায় ব্যক্তিগত কারণে আত্মগোপনে ছিলেন চারজনেই। বন্ধু বাসায় না থাকলেও তার মায়ের কাছে ছিলেন তারা। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে ত্ব-হা আত্মগোপনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সফরসঙ্গীরাও তাদের ফোন বন্ধ করে ত্ব-হার কাছে রেখে দেন।

মারুফ হোসেন জানান, ত্ব-হা নিখোঁজের ঘটনায় করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) আলোকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়। ত্ব-হার সঙ্গে থাকা আরেক সফরসঙ্গী ফিরোজ আলম বর্তমানে বগুড়ায় আছেন। বিষয়টি বগুড়া পুলিশকে জানানো হয়েছে।

এনএ/রাতদিন

মতামত দিন