নড়াইলের বিশ্বখ্যাত সেতারবাদক পন্ডিত রবি শংকর ও নৃত্যশিল্পী উদয় শংকরের জন্ম নড়াইলে। তবে তাদের পৈত্রিক এই বাড়ি এখন ডাকবাংলো বলেই চেনে এলাকার লোকেরা। বিশেষত এখানকার তরুন প্রজন্মের অনেকেই জানেন না যে, এই দুই দিকপালের পৈত্রিক নিবাস এদেশের নড়াইল জেলায়।
নড়াইল সদর থেকে কালিয়া উপজেলার দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। এই উপজেলার রামনগর গ্রামেই বিশ্বখ্যাত সেতারবাদক পন্ডিত রবি শংকর এবং ভাই নৃত্যশিল্পী উদয় শংকরের বাড়ি। এ প্রজন্মের অনেকেই জানে না দোতলা ভবনের এই বাড়িটা তাদের ছিল।
এখানকার কালিয়া আব্দুস সালাম ডিগ্রি কলেজ চত্বর থেকে ৩০০ গজ দূরে বাড়িটির অবস্থান। অথচ ওই কলেজের ছাত্র শীতল রায়, ইব্রাহিম শেখ, ইলিয়াছ মোল্লাসহ অনেকেই বলতে পারেনি ভারত উপমহাদেশের এই প্রখ্যাত সেতারবাদক পন্ডিত রবি শংকর ও তার ভাই নৃত্যশিল্পী উদয় শংকরের বাড়ি কোথায়।
তবে কালিয়া ডাকবাংলো বললেই যে কেউ সহজেই দেখিয়ে দেবে এই বাড়িটি। ডাকবাংলোয় এসেই চোখে পড়বে একটি প্রাচীন বাড়ি। বাড়িটির স্থাপত্যশৈলী দেখে সহজেই অনুমান করা নেওয়া যায় কোনো জমিদার বাড়ি ছিল এটা। এ বাড়িটি পন্ডিত রবি শংকর ও উদয় শংকরের বাড়ি। তাদের আদিপুরুষের বাড়ি।
দেশ স্বাধীনের পর থেকে বাড়িটাকে ডাকবাংলো হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাড়ির সামনেই ছোট একটি মাঠ। মাঠের চারপাশে পাকা রাস্তা। বাড়িটিকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে বাজার, স্কুল,কলেজ, পৌর ভবন, উপজেলা অফিস।
এক একর ৭০ শতাংশ জমি নিয়ে পন্ডিত রবি শংকর ও উদয় শংকরের পৈত্রিক ভিটা। স্থানীয়রা বলছেন এর পরিধি আরো বেশি ছিল। ১৯৪৩ সালের পর থেকে এ বাড়িতে কেউ থাকে না। ফলে বেশিরভাগ জমি দখল হয়ে গেছে।
প্রায় শত বছর বয়সি কালিয়া উপজেলার বাসিন্দা কালিদাস বিশ্বাস জানান, পন্ডিত রবি শংকর ও উদয় শংকরের পৈত্রিক ভিটা দেখতে মাঝে মধ্যে দেশের নানা জায়গা থেকে লোকজন আসে। কোলকাতা থেকেও কবি সাহিত্যিক ও গবেষকরা আসেন। কিন্তু পর্যটকদের হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়।
বাড়িটিকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আ্ওতায় এনে পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
জাতীয় পার্টির জি এম কাদের পর্যটন মন্ত্রী থাকাকালে কালিয়ার অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব পরিদর্শনে আসেন। তখন তিনি এলাকাবাসিকে জানিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বাড়িসহ সমাধিস্থল, সুন্দরবন, চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান, চারণ কবি বিজয় সরকার, প্রখ্যাত উপন্যাসিক ড.নিহার রঞ্জন গুপ্ত, জারী সম্রাট মোসলেম উদ্দীন বয়াতীর বাড়ি,পন্ডিত রবি শংকর ও উদয় শংকেরর বাড়ি, বড়দিয়া নৌ-বন্দরকে ঘিরে পর্যটন এলাকা করা হবে।
সরকারের একজন মন্ত্রীর এ আশ্বাস আজও পূরণ না হলেও এলাকাবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। একদিন হয়তোবা এই আশ্বাস আলোর মুখ দেখবে।
উজ্জ্বল রায়/নড়াইল/জেএম/রাতদিন