সময়ের সেরা ফাস্ট বোলার সাবেক অজি গতিদানব ব্রেট লি পা রাখলেন ৪৪তম বৎসরে। ১৯৯৬ সালে আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি।ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন ২০১২ সালে। তার বিদায় ব্যাটসম্যানদের জন্য ছিলো স্বস্তির সংবাদ।
কিন্তু বাইশগজের মাঠ ছেড়ে গেলেও মন ছেড়ে যেতে পারেনি ভক্তদের। এখনো তাকে জানার জন্য এ প্রজন্মের ক্রিকেটপ্রেমীরা সাইবারে সার্চ করে। তার ‘স্টাইলিশ’ বোলিং আর আগ্রাসী ধরন তাকে বহু তরুণ ক্রিকেটারের স্বপ্নের তারকা বানিয়ে রেখেছে।
ওই সময় ক্রিকেট রাজ্যে ফাস্ট বোলারের রাজত্বে রাজা ছিল পাকিস্তানের গতিদানব শোয়েব আখতার ও ব্রেট লি। এদের বল হাতে ছুটে চলা ব্যাটসম্যানদের মনে ভয় ধরিয়ে দিতো। সেই সময় এই দুই তারকাই বল করতেন গড়ে ঘন্টায় ১৫০ কিমি গতিতে। তবে শোয়েবের চেয়ে ব্রেট লি গতির সঙ্গে লাইন-লেন্থও বেশি সঠিক ছিলেন।
ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলারের তালিকায় তিনে আছেন ব্রেট লি (ঘন্টায় ১৬০.৮ কিমি)। এক নাম্বারে ছিল শোয়েব আখতার (ঘন্টায় ১৬১.৩ কিমি) ও দুই নাম্বরে ছিল শন টেইটের (ঘন্টায় ১৬১.১ কিমি)।
১৯৯৭ সালে মেলবোর্নে অভিষেক ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক তার। কিংবদন্তি রাহুল দ্রাবিরকে জীবনের প্রথম উইকেট হিসেবে শিকার করেন ও ৭ উইকেট তুলে নেন সেই ম্যাচে।
২১ বছর বয়স থেকে ব্যাটিংদের শান্তিতে ঘুমাতে দিতেন না।টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে হ্যাটট্রিক করা প্রথম বোলার এই অজি গ্রেট। রিকি পন্টিংয়ের নেত্রীত্বে ২০০৩ ও ২০০৭ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যও ছিলেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৭৬ টেস্ট নিয়েছেন ৩১০ উইকেট, ২২১ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ৩৮০ উইকেট, ২৫ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেছেন লি ২৮টি উইকেট নিয়েছেন।
গিটারিস্ট লি অবসরের পর টেলিভিশনে ক্রিকেটের ধারাভাষ্য দেওয়া ছাড়াও নিজের ব্যান্ড দল ‘সিক্স এন্ড আউট’ নিয়ে কনসার্ট ও চ্যারিটির সঙ্গে যুক্ত হন। ভারতের কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী আশা ভোসলের সঙ্গে একটি গানে কণ্ঠ দিয়ে আলোচনায় আসার পর ‘আনইন্ডিয়ান’ নামে একটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন লি।
এবার চলুন ব্রেট লি সম্পর্কেি আরো ১০টি বিশেষ তথ্য জেনে নিই,
১. ১৯৯৯ সালে নিজের অভিষেক টেস্টেই ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপে ভয় ধরিয়ে দিয়ে ৭ উইকেট তুলে নেন ব্রেট লি। তার প্রথম টেস্ট উইকেট ছিলেন ভারতীয় কিংবদন্তি রাহুল দ্রাবিড়।
২. ডেনিস লিলির পর অভিষেকে টেস্টেই ৫ উইকেট তুলে নেওয়া প্রথম অজি বোলার।
৩. টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করা প্রথম বোলার ব্রেট লি। বাংলাদেশের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছিলেন তিনি।
৪. রক ব্যান্ড ‘সিক্স এন্ড আউট’র সদস্য তিনি, যা সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে গঠিত। তার ভাই শন লিও এই ব্যান্ডের সদস্য।
৫. তিনি সঙ্গীত আর ভারতকে ভালোবাসেন। ভারতে তিনি ‘মিউজিক ফাউন্ডেশন’ গঠন করেছেন, যেখানে সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের গান শেখানো হয়।
৬. ভারতের কিংবদন্তি শিল্পী আশা ভোসলের সঙ্গে একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন লি। ‘ইউ আর দ্য ওয়ান ফর মি’ নামে গানটির লিরিকও তার লেখা।
৭. অ্যাকুস্টিক ও বেজ গিটার বাজানোয় তার বিশেষ দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ তিনি অনেকবারই দেখিয়েছেন। তবে একইসঙ্গে তিনি পিয়েনো ও মাউথ অর্গানও বাজাতে পারেন তিনি।
৮. তার নিজের পালিত দুটি ‘ক্লাউন ফিস আছে’, যাদের নাম ‘ফাইন্ডিং’ ও ‘নিমো”।
৯. মাত্র ৯ বছর বয়সে প্রথম ক্রিকেট খেলতে নেমে এক ওভারেই ছয় ব্যাটসম্যানকে আউট করে দিয়েছিলেন তিনি!
১০. মাঠে তার আগ্রাসী বোলিংয়ের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ডেলিভারি ‘বিমার’, যা ক্রিকেটের স্পিরিট ও আইনের বিরুদ্ধে যায়, সেই ‘বিমার’ দিয়েই খ্যাতি অর্জন করেন লি।
আরআই /রাতদিন