বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯। এ ভাইরাসের প্রার্দুভাব ঠেকাতে সাবান বা অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আর এই সুযোগে বাজার থেকে প্রায় উধাও হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার।
তবে এর বিকল্প ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকছে প্রতিবেশি ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার মানুষ। তারা হাত পরিস্কার করতে মদের দোকানগুলো ভিড় করছেন। ঠিক এরকমই জানাচ্ছে দেশটির আনন্দবাজার পত্রিকা। পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি হুবহু তুলে ধরো হলো:
করোনা নিয়ে চারপাশে হইহই কাণ্ড চলছে। কমবেশি সকলেই পরামর্শ দিচ্ছেন, ‘‘ষাট শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করতে হবে।’’
যা শুনে বহু লোকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘হবে তো বটে, কিন্তু পাই কোথায়?’’ এ প্রশ্নেরও যথেষ্ট কারণ রয়েছে। বেশিরভাগ ওষুধ বা অন্য দোকানে গেলেই শুনতে হচ্ছে— ‘স্টক শেষ!’
তা হলে?
তা হলে আর কী! বঙ্গের এই বিপুল বাজারে কি অ্যালকোহল কম পড়িয়াছে? এত দিন অনেকেই সে দোকানে যাওয়া তো দূরের কথা, তার ছায়াও মাড়াননি অনেকে। কিন্তু বিপদের দিনে লজ্জা, ঘেন্না ভয়, তিন থাকতে নেই। তাই সটান মদের দোকানে ঢুকে এক জন ভরাট গলায় বললেন, ‘‘আমাকে একটা স্যানিটাইজ়ার দেবেন তো!’’
মদের দোকানের কর্মী প্রথম ক’দিন ভ্যাবাচাকা খেয়েছিলেন। কিন্তু এখন এমন ‘আবদারে’ তিনি ধাতস্থ হয়ে গিয়েছেন। তাই নরম গলায় গ্রিলের উল্টো দিকের ক্রেতাকে তিনি বলেন, ‘‘এটা স্যানিটাইজ়ারের দোকান নয়।’’ কিন্তু ক্রেতাও নাছোড়, ‘‘আহা, তা হলে হাত ধোওয়ার মদটাই দিন।”
মদের দোকানের কর্মীরা বলছেন, ‘‘করোনার দাপটে এ এক আজব ফ্যাসাদে পড়েছি মশাই!’’ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক প্রবীণের প্রশ্ন শুনে আকাশ থেকে পড়েছিলেন জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া একটি মদের দোকানের কর্মী অমিত সরকার। সেই প্রবীণ নিচু গলায় জানতে চেয়েছিলেন, “আচ্ছা ভাই, হাত ধোওয়ার জন্য কোন মদটা ভাল হবে, রাম নাকি ভদকা?”
কদমতলার একটি মদের দোকানের কর্মী পিঙ্কু ঘোষ বলছেন, ‘‘এখন রোজই এমনটা ঘটছে। কেউ কেউ আবার মদের বোতল কিনে তা দিয়ে হাতও ধুচ্ছেন। কী কাণ্ড, বলুন তো!’’ কেউ কেউ আবার বোতলের গায়ে সাঁটা লেবেল দেখে রেগে গিয়ে বলছেন, ‘‘এ কী, ষাট শতাংশের জায়গায় চল্লিশ শতাংশ অ্যালকোহল কেন!’’ এমন কাণ্ড দেখে প্রকৃত সুরাপ্রেমীদের টিপ্পনী, ‘‘ভাইরাসে রাশ টানা সত্যিই কঠিন!’’
এবি/রাতদিন