শাহনুর রহমান সিক্ত। অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলেন তিনি। নিজেকে পরিচয় দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে। নিজেকে দাবি করেন, ৩৬তম বিসিএস ক্যাডার হিসেবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস তার হাতের নাগালে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়েই এক ডজন বিয়ে করেছেন। প্রতারণার ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিয়েছেন কাড়ি কাড়ি টাকা।
পুলিশ ওই নারীকে গ্রেফতারের পরই এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে কালের কন্ঠ অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, ওই নারীর পড়াশোনা আসলে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত। নিজের নামের সঙ্গে শাহনুর আকতার নামের একজন বিসিএস ক্যাডারের নামের মিল থাকায় আটক সিক্ত ওই ক্যাডারের পরিচয় দিতেন এতদিন। আর করতেন একের পর এক প্রতারণা।
রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের একটি মামলায় পুলিশ গত ২ ফেব্রুয়ারি সিক্তকে গ্রেপ্তার করে। মামলাটি করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ওই নারীর কথিত স্বামী।
আর এরপরই পুলিশের তদন্তে বেড়িয়ে আসে এসব তথ্য।
গ্রেফতার সিক্ত নিজেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৩৮তম ব্যাচের ছাত্রী দাবি করে আসছিলেন এতদিন ধরে। পাশাপাশি তার, মা, ভাই, চাচাদেরও পরিচয় দিতেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইত্যাদি পরিচয়ে।
আর এসব পরিচয় দিয়েই এক ডজন ব্যক্তিকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছেন শাহনুর রহমান সিক্ত, করেছেন বিয়ে। আবার স্বামীর পরিচিত ব্যক্তিদের চাকরি দেয়ার প্রলোভন ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেয়ার নামে মোটা অংকের টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন।
পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এই নারীর ভয়ংকর সব প্রতারণার গল্প। উত্তরা পশ্চিম থানার মামলায় এখন এই নারী কারাগারে আছেন। শাহনুর রহমান সিক্ত ছাড়াও ওই নারী সিক্ত খন্দকার, তাহামিনা আক্তার পলি ও তামিমা আক্তার পলি বলে নিজের পরিচয় দিতেন।
জানা গেছে, ১০/১২ বছর ধরে একই ধরণের প্রতারণা করে চলেছেন এই নারী। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই শিক্ষার্থী ছাড়াও আরও অন্তত ১০ জনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়েছেন।
পুলিশের উত্তরা বিভাগের ডিসি নাবিদ কামাল শৈবাল সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে, সে একজন প্রতারক। তার সম্পর্কে এরই মধ্যে অনেক তথ্য জানা গেছে।
এবি/রাতদিন