করোনা পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে রংপুর মহানগরসহ চার উপজেলাতে ন্যায্যমূল্যে চিনি, ডাল, তেল ও আটা বিক্রি শুরু করেছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ও খাদ্য বিভাগ। খোলাবাজারে ট্রাকে করে বিক্রি করা এসব খাদ্যপণ্য স্বল্পমূল্যে পেতে ভিড় করছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষজন। যদিও পণ্য কেনার সময় সামাজিক দূরত্ব মানছে না বেশির ভাগ ক্রেতা- এমন অভিযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল নগরীর শাপলা চত্বর, লালবাগ মোড়, প্রেসক্লাব মোড়, কাচারী বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে টিসিবির পণ্য কিনতে ক্রেতাদের লম্বা সারি। এসব স্থানে ট্রাক থেকে তিন দূরত্ব নির্ধারণ করে রঙ দিয়ে চিহ্ন দেয়া রয়েছে। কিন্তু দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে নিয়ম মানছেন না কেউ। একই চিত্র রেলওয়ে স্টেশন বাজার, সিটি বাজার, শালবন, সিও বাজার, সাতমাথা, ও মডার্ণ মোড় এলাকাতেও দেখা গেছে।
এদিকে টিসিবি ও খাদ্য বিভাগের ন্যায্যমূলের এসব পণ্যের মধ্যে দ্রুত সময়ে শেষ হচ্ছে মসুর ডাল এবং আটা। এর চাহিদা বেশি হওয়ায় ডাল ও আটা সহজেই মিলছে না লম্বা সারির ক্রেতাদের। তবে বাজার মূল্যের চেয়ে টিসিবির বিক্রিত পণ্যের দাম কম হওয়াতে ভিড় রয়েছে সবখানেই।
নগরীর প্রেসক্লাব মোড়ে কথা হয় মজিবর রহমান নামে এক দিনমজুরের সাথে। তিনি বলেন, কম দামে জিনিস পাইলে, না নিয়্যা কি উপায় আছে। লাইনোত দাড়েয়া নেওয়া কষ্টকর। তারপরও নেওয়া নাগবে।
এসময় নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখা প্রসঙ্গে এই দিনমজুরর বলেন, লাইনোত কি মুই একলায় আচু। এটে গরীব ধনী, শিক্ষিত, অশিক্ষিত কত মাইনসে দাড়াইছে। ওমরা তো কায়ো নিয়ম মানি দাড়ায় নাই।’
এদিকে টিসিবি রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর দশটি পয়েন্টে ট্রাকে করে ডিলারদের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন ৩০০ কেজি ডাল, ৬৫০ কেজি চিনি ও ১০০০ হাজার লিটার ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও খাদ্য বিভাগের উদ্যোগে নগরীর ১৫টি স্থানে খোলাবাজারে ১৮ টাকা দরে আটা বিক্রি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিটি বাজারের পাইকারী দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল ৭০-৮০ টাকা, প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে টিসিবির পণ্যবাহি ট্রাকে প্রতি কেজি চিনি ৫০ টাকা, মসুর ডাল (তীর) ৫০ টাকা এবং প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ৮০ টাকায় বিক্রি করছে।
এব্যাপারে টিসিবি রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তা সুজাউদ্দৌলা জানান, রংপুর নগরীর দশটি স্থান ছাড়াও পীরগঞ্জ, পীরগাছা, বদরগঞ্জ ও কাউনিয়াতে একটি করে ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে বাকি চার উপজেলাতে এই কার্যক্রম শুরু হবে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল কাদের জানান, ন্যায্যমূল্যে খোলাবাজারে ১৮ টাকা দরে নগরীর পনেরটি স্থানে আটা বিক্রি করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে ৩০ টাকা কেজি মূল্যে চাল বিক্রির কার্যক্রমও শুরু হবে।
জেএম/রাতদিন