পাবনার রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিভিন্ন ভবনের সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের জন্য বিছানা, বালিশ ও আসবাবপত্র কেনায় দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ৩৩ কর্মকর্তাকে তলব করা হয়েছে। রোববার, ৩ নভেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিনের স্বাক্ষরিত নোটিশে তাদের তলব করা হয় ।
৩৩ জনের মধ্যে ২৯ জন গণপূর্ত অধিদপ্তরের,আর বাকী ৪ জন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন রূপপুর প্রকল্পের কর্মরত।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা হলেন- পাবনা গণপূর্ত বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলম, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. তারেক, মো. তাহাদুজ্জামান, মো. কামরুজ্জামান, মো. মোস্তফা কামাল, মো. আবু সাঈদ, মো. ফজলে হক, মো. শরীফুল ইসলাম, আহমেদ সাজ্জাদ খান, সুমন কুমার নন্দী, মো. শাহীন উদ্দিন, মো. আমিনুল ইসলাম, জাহিদুল করিম।
রাজশাহী গণপূর্ত সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী একেএম জিল্লুর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী খন্দকার মো. আহসানুল হক, খোরশেদা ইয়াছবিরা, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. নজিবুর রহমান, মো. শফিকুর রহমান, উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেন, শাহনাজ আক্তার, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মো. মকলেসুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম।
পাবনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দেবাশীষ চন্দ্র সাহা, সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম, মো. রওশন আলী, উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শফিউজ্জামান, রওশন আলী ও মো. রফিকুজ্জামান।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের চার কর্মকর্তা হলেন- প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর, উপপ্রকল্প পরিচালক মো. হাসিনুর রহমান, উপসহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান ও মো. মাহবুবুর রহমান। এদের চারজনকে ১৩ নভেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠির কপি পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া ৭ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত পাবনা ও রাজশাহী জোনের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাদেরকে দেয়া নোটিশের কপি গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর পাঠানো হয়েছে।
রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিছানা, বালিশ ও আসবাবপত্র সরবরাহে ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় তদন্ত করে। তদন্তে ৪৩ কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা উঠে আসে।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা যায়, কভারসহ প্রতিটি বালিশের দাম পড়েছে ৪ হাজার ৩৪ টাকা । ৩৬ তম বিসিএসের একজন শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে প্রথম কর্মদিবসেই অবৈধ বিলে স্বাক্ষর করানো হয়।
সরকারি তদন্ত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ায় এমন দুর্নীতি হয়েছে । এতে আরও বলা হয়, আসবাবপত্র পরিবহন এবং বিভিন্ন তলায় ওঠানোর ক্ষেত্রে গণপূর্ত অধিদপ্তরের রেট সিডিউল-২০১৮-এর নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি ।
সিডিউল বহির্ভূত আইটেমগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে দর নির্ধারণের পদ্ধতি সঠিক ছিল না। দরপত্র আহ্বানের শর্তাবলিতে পণ্য সরবরাহের কোনো অভিজ্ঞতা না চেয়ে শুধু নির্মাণকাজের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়, যা কোনোক্রমেই যুক্তিযুক্ত নয়।
তদন্ত রিপোর্টে চুক্তিমূল্যের চেয়ে বেশি ৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত আনতে সুপারিশসহ বিষয়টি দুদকে পাঠাতে বলা হয়। এর ভিত্তিতেই দুদক থেকে শুরু হয়েছে অনুসন্ধান কাজ। সুত্র: বাংলা রিপোর্ট।
এসকে/রাতদিন