স্ত্রী ও শাশুড়ি পরিকল্পিতভাবে জাকারিয়া বিন হক শুভকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তার বড় বোন নাজনীন বিনতে হক। আজ শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগে তিনি এ দাবি করেন।
এদিকে বাসা থেকে শুভর মরদেহ নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই তার স্ত্রী শেহনীলা নাজ ওরফে নাজ ও শাশুড়ি আছমা বেগম আর কোনো খোঁজ নেননি বলে জানা গেছে। মরদেহ নিয়ে যাওয়ার পরপরই তারা ওই বাসা ত্যাগ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষে জাকারিয়া বিন হক শুভ ওয়ালটন মোবাইল সেক্টর গাজীপুর জোনের ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কে কর্মরত ছিলেন। সদা হাস্যেজ্জ্বল এই যুবক লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকান্ডসহ সাহিত্য, সংস্কৃতি সম্পর্কিত যাবতীয় কর্মকান্ডে জড়িতে ছিলেন।
শুভ’র শাশুড়ি গতকাল গণমাধ্যমে দাবি করেছেন, স্ত্রী নাজ’র সাথে সিগারেট খাওয়া নিয়ে কথাকাটির জেরে সে ফ্যানের সাথে ওড়না ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে তার স্ত্রী গিয়ে ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে তা নামিয়ে ফেলে।
পরিবার ও স্বজনরা জানান, মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের ভাড়া বাসা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে পুলিশ জাকারিয়া বিন হক শুভর মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। আজ শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে তার প্রথম জানাজা শেষে বন্ধু-স্বজনরা মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ির পথে রওয়ানা দেন।
তার বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঘনেশ্যাম(এমসি মোড়) গ্রামে।
আজ রাত দশটায় তুষভান্ডার জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামের সামনে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
শুভর প্রয়াত বাবা আব্দুল হক সরকারি করিম উদ্দিন কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। দুই ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়।
নিহতের বড় বোন নাজনীন বিনতে হক থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগে দাবি করেন, বিয়ের পর আলাদা বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া থাকতো শুভ। এর পর থেকেই পরিবারের সাথে শুভকে যোগাযোগ করতো দিত না নাজ। সে কোনোভাবে যোগাযোগ করলেও তার স্ত্রী শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। সন্দেহপ্রবন নাজ সবসময় স্বামীর ফোন চেক করতো, বন্ধুবান্ধবের সাথেও যোগাযোগ করতে দিত না। ফলে শুভ সবসময় মানসিক যন্ত্রনায় ভুগতো।
তিনি আরও দাবি করেন, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নাজের মা শুভর পরিবারকে না জানিয়ে ‘আত্মহত্যার’ সংবাদ ফোনে জানায় মামাকে। মৃত্যুর পর মা-মেয়ে মরদেহ দাফন, ময়নাতদন্ত বা কোনো কিছুতেই কোনো সহয়োগিতা করেননি এমনকি এসে খোঁজও নেননি।
সবকিছু মিলিয়ে মা ও মেয়ে মিলে শুভকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে নাজনীন বিনতে হক লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন।
এবি/রাতদিন