শুধু বিসিবি নয়, আইসিসির বিধিবিধানও ভেঙেছেন তিনি। এই ‘ভুল’ আরো বড়। আরো ভয়াবহ। বছর দুয়েক আগে ক্রিকেট জুয়াড়ির কাছ থেকে ফোনে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের একটা প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। জুয়াড়ির সেই প্রস্তাবে তিনি সম্মত হননি। কিন্তু ভুলটা করেন সেই ঘটনা আইসিসির কাছে রিপোর্ট না করে। সেই ভুলের শাস্তি হিসেবেই এখন তার সামনে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞার শাস্তি ঝুলছে। আর এই পরিস্থিতির কারণেই সাকিব আল হাসানের ভারত সফরে যাওয়া হচ্ছে না, এটা নিশ্চিত। আজ কালের মধ্যে আইসিসি সাকিবের এই ‘ভুল’ এবং তার সম্ভাব্য শাস্তির বিষয়টি জানিয়ে প্রেস রিলিজ দিতে যাচ্ছে। সাকিবের এই ‘অপরাধ’ এবং আশু ‘শাস্তির’ বিষয়টি বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকা সমকাল তাদের ২৯ অক্টোবরের প্রকাশিত সংখ্যায় জানিয়েছে।
বিষয়টা কি ছিল ?
দুই বছর আগে সাকিবের কাছে এক ক্রিকেট জুয়াড়ি কোন একটি আর্ন্তজাতিক ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। সাকিব সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। যেহেতু সেই ম্যাচ রেফারির আইসিসির কালো তালিকাভুক্ত ছিল। তাই তার ফোনের কল রেকর্ড ট্র্যাক করছিল আইসিসি। সেই অনুযায়ী আইসিসি পরে সাকিবের কাছে জানতে চায়- সেই ক্রিকেট জুয়াড়ি তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কিনা। সাকিব সেই সময় আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটকে (আকসু) জানান-নাহ এমন কিছু ঘটেনি।
সাকিবের ভুলটা ওটুকুই।
কিন্তু পরে যখন আইসিসি তার সামনে সেই কল রেকর্ড উপস্থাপন করেন তখন সাকিব তার ভুলটা বুঝতে পারেন। ভুলটা তিনি স্বীকার করে নেন। জানান-আসলে তিনি বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেননি। তাই আইসিসিকে তার জানানো হয়নি।
বিধি জানাচ্ছে- কোন ক্রিকেটার ক্রিকেট জুয়াড়ির কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পেলে সেটা যদি তিনি আইসিসি বা তার সংশ্লিষ্ঠ ক্রিকেট বোর্ডকে না জানান তাহলে তাকে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞার শাস্তি পেতে হবে। সাকিব সেই ভুলের চক্রেই পড়ে গেছেন।
বিসিবি কি বলছে?
বিসিবি’র কোন দায়িত্ববান কর্মকর্তা এই প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে ধারণা করা হচ্ছে মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর বিসিবি এক সংবাদ সম্মেলন করে এই বিষয়টি পরিস্কার করতে পারে। এই সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি ভারত সফরের জন্য টি- টোয়েন্টি দল ঘোষণা করবে। সেখানেই জানানো হবে ঠিক কি কারণে, কেন সাকিব এই দলের সঙ্গে যাচ্ছেন না।
বিষয়টা জানতে এত সময় কেন লাগল?
সাকিবের সঙ্গে ঠিক এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সম্পর্কটাও খুব একটা সুখকর কিছু নেই। ক্রিকেটারদের আন্দোলন এবং তার বাণিজ্যিক চুক্তি নিয়ে বিসিবি সাকিবের ওপর ভীষণ বিরক্ত। ঠিক এমন সময় সাকিবের ওপর আইসিসির এমন সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞাকে অনেকে বাঁকা চোখে দেখছেন। এই বিষয়ের সহজ যুক্তি হল-আইসিসি সাকিবের মতো একজন হাইপ্রোফাইল ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনার আগে তো যথেস্ট প্রমাণ নিয়েই মাঠে নামবে। সেই তথ্য-প্রমাণাদি যোগাড়েই আইসিসি এতো লম্বা সময় নিয়েছে।
এন এ/রাতদিন