ঘোড়া জবাই করে মাংস বিক্রি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে দিনাজপুরের বিরলে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় ঘোড়া জবাই ও এর মাংস বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘোড়ার মাংস খাওয়া যাবে- ধর্মীয় এমন অপব্যাখ্যা দিয়ে এই মাংস বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকার মুসল্লিরা।
এদিকে এই ঘোড়ার মাংস কিনে খাওয়ার পর পুলিশের ভয়ে এখন পালিয়ে বেড়াছে ওই এলাকার প্রায় অর্ধশত মানুষ।
শুক্রবার, ৩০ আগস্ট বিরল উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, বিরলের কাজীপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ও কাঠব্যবসায়ী কাইয়ুম আলী শুক্রবার সকালে কাজীপাড়া এলাকায় একটি ঘোড়া জবাই করে। এ সময় তারা ঘোড়ার মাংস খাওয়া যাবে-ধর্মীয় এমন ব্যাখ্যা দিয়ে ২০০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি করে।
দুপুরের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যায় ঘোড়ার প্রায় দেড় মণ মাংস। এই মাংস কিনে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে দুপুরে খান বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হলে স্থানীয় কাজীপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি লোকমান হাকিম বিরল থানায় অভিযোগ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ও কাইয়ুম আলী পালিয়ে যান।
পরে ঘটনাস্থল থেকে কাইয়ুম আলীর ছোটভাই রায়হান আলীকে ২ কেজি ঘোড়ার মাংসসহ আটক করে পুলিশ।
আটক রায়হান আলী বিরল উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামের আবদুল গণির ছেলে।
রায়হান পুলিশকে জানান, ঘোড়াটি তার বড়ভাই কাঠব্যবসায়ী কাইয়ুম আলীর।
কাজীপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি লোকমান হাকিম জানান, ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে এলাকার মানুষের কাছে এই ঘোড়ার মাংস বিক্রি করে তারা এলাকাবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
বিরল থানার ওসি এটিএম গোলাম রসুল বলেন, বিরলে চাকরি করতে এসে এই বিরল ঘটনাটিও আমাকে দেখতে হল।
ঘোড়া জবাই ও ঘোড়ার মাংস বিক্রি আইনসম্মত নয় উল্লেখ করে তিনি জানান, এ নিয়ে এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে রায়হান আলী নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রির সঙ্গে সরাসরি জড়িত শফিকুল ইসলাম ও কাইয়ুম আলীকে পুলিশ খুঁজছে।
বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম রওশন কবীর জানান, ঘোড়া জবাই করা আইনগতভাবে নিষেধ আছে। এ বিষয়ে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ইউএনও।