দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সাহানুর রহমান। সদ্য সমাপ্ত জেএসসি পরীক্ষার ২৫০টি খাতা তিনি মূল্যায়নের জন্য দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড থেকে গ্রহণ করেন। কিন্তু নিজে খাতা মূল্যায়ন না করে প্রতিবেশি জিয়াউর রহমানের বাড়িতে ২৫০টি খাতা মূল্যায়নের জন্য দিয়ে যান। যেখানে দুটি শিশু সেইসব খাতা মূল্যায়ন করেছে।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষক খাতা না দেখে অন্যের বাড়িতে দিয়ে ওই শিশুর মাধ্যমে খাতা মূল্যায়ন করানোর অভিযোগে উপজেলা প্রশাসন সোমবার ১০০ খাতা জব্দ করেছে।
জানা গেছে, বিরামপুর পৌর শহরের আদর্শ স্কুল পাড়ার বাসিন্দা ফুলবাড়ী উপজেলার জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সাহানুর রহমান সদ্য সমাপ্ত জেএসসি পরীক্ষার ২৫০টি খাতা মূল্যায়নের জন্য দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড থেকে গ্রহণ করেন। কিন্তু তিনি নিজে খাতা মূল্যায়ন না করে প্রতিবেশি জিয়াউর রহমানের বাড়িতে ২৫০টি খাতা মূল্যায়নের জন্য দিয়ে যান।
জিয়াউর রহমানের স্ত্রী দিলরুবা বেগম বলেন, শিক্ষক সাহানুর রহমান ২৫০টি খাতার মধ্যে মূল্যায়ন শেষে ১৫০টি খাতা নিয়ে গেছে এবং অবশিষ্ট ১০০টি খাতা আজ নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই খাতা নিয়ে যাওয়ার পর শিক্ষক সাহানুর রহমানের স্ত্রী বিরামপুর আদর্শ হাইস্কুলের শিক্ষিকা শাহনাজ বেগমের খাতাগুলোও দিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
জিয়াউর রহমানের স্ত্রী দিলরুবা বেগম আরও জানান, তার জেএসসি পরীক্ষা দেয়া পুত্র অনিক ও নার্সারি পড়ুয়া শিশুপুত্র আবরার ওইসব খাতা মূল্যায়ন করছে।
গোপন সূত্রে এ খবর পাওয়ার পর বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিনিধি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূর আলম ও যুব উন্নয়ন অফিসার জামিল উদ্দিন পুলিশসহ জিয়ার বাড়ি থেকে জেএসসি পরীক্ষার ১০০টি খাতা জব্দ করে আনেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ ও অভিভাবকদের মাঝে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূর আলম জানান, জব্দকৃত খাতা সিলগালা করে থানায় জমা দেয়া হয়েছে।
থানার ডিউটি অফিসার এসআই জাহাঙ্গীর বাদশা রনি জানান, এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর আলম বিকালে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদুর রহমান জানান, এ বিষয়ে তিনি দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে জব্দকৃত খাতার পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন বা ফলাফলে কোনো অসুবিধা হবে না।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।