জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন ও ট্যাংকলরির ভাড়া বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে রোববার, ১ ডিসেম্বর) থেকে রংপুর বিভাগের আট জেলায় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট (কর্মবিরতি) আহ্বান করেছে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এতে জ্বালানি তেল উত্তোলন, পরিবহন ও বিপণন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
শনিবার, ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় ধর্মঘটের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রংপুর জেলা পেট্রোল পাম্প অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু।
তিনি জানান, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তে ১৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আমাদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকারের পক্ষ থেকে শুধু মৌখিক আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় পেট্রোল পাম্প পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই খাতটি এরই মধ্যে অলাভজনক হয়ে পড়েছে।
ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতীত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লাইসেন্স গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল, বিএসটিআই কর্তৃক আন্ডার গ্রাউন্ড ট্যাংক ৫ বছর অন্তর বাধ্যতামূলক ক্যালিব্রেশনের সিদ্ধান্ত বাতিল, ট্যাংকলরি চলাচলে পুলিশি হয়রানি বন্ধ, সুনির্দিষ্ট দফতর ব্যতীত সরকারি অন্যান্য দাপ্তরিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ডিলার বা এজেন্টদেরকে অযথা হয়রানি বন্ধ, নতুন কোনো পেট্রোল পাম্প নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জ্বালানি তেল মালিক সমিতির ছাড়পত্রের বিধান চালু, পেট্রোল পাম্পের পাশে যেকোনো স্থাপনা নির্মাণের পূর্বে জেলা প্রশাসকের অনাপত্তি সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক ও বিভিন্ন জেলায় ট্যাংকলরি থেকে জোরপূর্বক পৌরসভার চাঁদা গ্রহণ বন্ধ করা।
সুরমা ফিলিং স্টেশনের মালিক মো. আতিকুর রহমান জানান, প্রতিমাসে পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন এবং কেরাসিন মিলে মোট জ্বালানি তেলের চাহিদা চার লাখ পাঁচ হাজার লিটার। অথচ তিনি শতকরা ২৫ ভাগ জ্বালানি তেল পাচ্ছেন না। এতে তিনি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এরকম বিভিন্ন সমস্যা ও সংকটের কারণে তারা ১৫ দফা দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরেছেন।
এদিকে ধর্মঘটের প্রতি ট্যাংকলরির অধিকাংশ চালক-শ্রমিকরা সমর্থন জানিয়েছে। তারা মনে করছেন, ট্যাংকলরি চালাতে গিয়ে সড়কে পুলিশের হয়রানির শিকার হতে হয়। ট্যাংকলরি থেকে জোরপূর্বক পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধসহ অন্যান্য দাবি বাস্তবায়ন হওয়া জরুরি।
রোববার থেকে জ্বালানি তেল বিপণন বন্ধ থাকার এই ঘোষণায় নগরীর বেশির ভাগ গ্রাহকদেরকে অতিরিক্ত তেল সরবরাহ করতে দেখা গেছে। অনেকেই মনে করছেন, কর্মবিরতির নামে ডাকা এই ধর্মঘটে জ্বালানি তেলের জন্য যানবাহন নিয়ে চলাচলে ভোগান্তির শিকার হবেন সাধারণ মানুষ।
এনএ /রাতদিন