রংপুরে নমুনা জমা দিয়ে আইসোলেশনে না থেকে ৮ দিন রোগী দেখা ও স্বাভাবিক চলাফেরার অভিযোগ উঠেছে এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে।
চলতি মাসের ২ তারিখে ওই ডাক্তারের নমুনা জমা দিয়ে গতকাল বুধবার (১০ জুন) রাতে রিপোর্ট আসলে তাতে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার (১১ জুন) দুপুর বারোটার দিকে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের লোকজন ডাক্তারের ওই চেম্বার লকডাউন ঘোষণা করেন।
অভিযুক্ত ডা. আহসান হাবীব (এমবিবিএস) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক এবং নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড় এলাকার চাউল আমোদ গলিতে রোগী দেখেন।
সিভিল সার্জন অফিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ২ জুন ওই ডাক্তার নমুনা জমা দিয়েছিলেন। রংপুর থেকে ঢাকার শেরেবাংলা পিসিআর ল্যাবে ৩০০ নমুনা পাঠানো হয়েছিল। গতকাল বুধবার রাতে তার ফলাফল আসে। এতে ৬৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
নিয়ম মাফিক নমুনা দেওয়ার পর হোম আইসোলেশনে থাকার কথা থাকলেও অভিযুক্ত ডাক্তার আহসান হাবীব বিষয়টি গোপন রেখে নিয়মিত রোগী দেখা, মসজিদে যাওয়া, ঘোরাঘুরিসহ স্বাভাবিক জীবন-যাপন করেছেন। প্রতিদিন গড়ে ৮০-১০০ রোগী দেখেছেন তিনি। এই কয়েক দিনে তিনি কয়েক হাজার মানুষের সংস্পর্শে এসেছিলেন।
বৃহস্পতিবার, ১১ জুন সকালেও তিনি নিজ চেম্বারে এসেছিলেন। পরে বিষয়টি প্রতিবেশী এক সাংবাদিকের নজরে আসলে তা জানাজানি হয়। এলাকাবাসী ও রংপুরে এ নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন এলাকাবাসী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন এলাকাবাসী জানান, তিনি একঘেয়েমি মানুষ। করোনা নমুনা দিয়েও তা গোপন রেখে স্বাভাবিক চলাফেরা করেছেন। তাছাড়া এলাকাবাসীর সঙ্গেও তার ভালো সম্পর্ক নেই।
বিষয়টি নিয়ে রংপুরে সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় বলেন, একজন ডাক্তার হয়ে এরকম করা ঠিক হয়নি। ওনার আইসোলেশনে থাকা উচিৎ ছিল। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কামরুজ্জামান ইবনে তাজ বলেন, নমুনা এক সপ্তাহ আগে নেওয়া হলে গতকাল তার ফলাফল এসেছে। একদিনে তো এতগুলো রোগীর বাসভবন লকডাউন করা সম্ভব না। তাই আজ সকালে লকডাউন করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত ডাক্তার আহসান হাবীবের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও তার মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়।
এনএ/রাতদিন