চাকুরী বহাল রেখে বকেয়া বেতন দেয়ার উচ্চ আদালতের নির্দেশ মানছেন লালমনিরহাট রেল বিভাগ। উল্টো করোনার এই ভয়াবহ দু:সময়ে অর্ধশতাধিক শ্রমিক ছাটাই করেছে কর্তৃপক্ষ । ফলে চাকুরী হারিয়ে নিদারুন কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা।
জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগের অধিনে রেল ক্রসিংয়ে অস্থায়ী গেটম্যান নিয়োগ দেয়া হয়। যা স্থায়ী গেটম্যান নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত বার্ষিক নবায়নের মাধ্যমে চলমান থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়। লালমনিরহাট বেলওয়ে বিভাগে এমন শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন ১০৮ জন। যারা দৈনিক ৪শত টাকা মজুরী হিসেবে উন্নয়ন খাত থেকে প্রতি মাসে ১২ হাজার টাকা বেতন পান।
প্রতি বছর নবায়নযোগ্য এসব শ্রমিক ৩ বছর সততার সাথে দায়িত্ব পালন করলে তাদেরকে রাজস্ব খাতে স্থান্তারিত করা যাবে মর্মে ২০০৩ সালে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগেও নীতিগত ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যার স্মারক নং মপবি/কঃবিঃশাঃ/কপগ-১১/২০০১-১১১।
বিগত ২০১৭ সালে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া এসব শ্রমিককে একই পদে রাজস্ব খাতে নিয়োগ প্রদানের ব্যবস্থা করতে মহামান্য হাইকোর্ট নির্দেশনা জারি করেন। যার প্রেক্ষিতে ওই বছর ৩ ডিসেম্বর এসব শ্রমিককে রাজস্ব খাতে আত্মীকরনের ব্যবস্থা করতে রেলওয়ের সকল বিভাগীয় কার্যালয়ে নির্দেশনা জারি করে পত্র পাঠান রেলভবনের সংস্থাপন শাখার উপ পরিচালক। এর স্মারক নং ৫৪.০১.২৬০০.০০৬.১১.০২৫.১২।
স্থায়ী ও রাজস্ব খাতে নিয়োগের সুযোগ পেয়ে লালমনিরহাট রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগ মোটা টাকার নিয়োগ বাণিজ্যে মেতে উঠে বলে শ্রমিকদের অভিযোগ। এ বাণিজ্য করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য ও করোনা দুর্যোগে দীর্ঘ ৯/১০ বছরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শ্রমিকদের ছাটাই শুরু করে বলে অভিযোগ শ্রমিকদের। করোনা কালে অফিস ও রেল সীমিত করন করার সুযোগে গত ২ জুলাই জি/এলসি/বিবরন/১২/পর্ব-২ নং স্মারকের
পত্রের মাধ্যমে রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগীয় এলাকার ৫৮ জন অস্থায়ী গেটম্যানকে (টিএলআর) ছাটাই করেন বিভাগীয় ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট(ডিটিএস) স্নেহাশীষ দাশ গুপ্ত।
করোনা দুর্যোগে দুই মাসের বকেয়া বেতন না পেয়ে আর্থিক সংকটে পড়া এসব শ্রমিক চাকুরী হারিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েন। শ্রমিক ছাটাইয়ের চিঠি বাতিল করে চাকুরী বহালের দাবিতে চাকুরীহারা ৫৮ শ্রমিক রেলমন্ত্রীসহ রেলভবনের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সাম্প্রতি এমন ঘটনায় শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে সেই ছাটাই চিঠি বাতিল করতে বাধ্য হন রেলওয়ে পাকশী বিভাগ। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট(ডিটিএস) স্নেহাশীষ দাশ গুপ্ত’র সরকারী নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।