লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অপহৃত এক স্কুলছাত্রী তিন মাসেও উদ্ধার না হওয়ায় ফুঁসে উঠছে স্থানীয় লোকজন।
তাকে উদ্ধারের দাবি নিয়ে তাই স্থানীয় সাধারণ মানুষ আর হাজারো শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে মানববন্ধন করেছেন। তাদের সাথে যোগ দেন জনপ্রতিনিধিদেরও কেউ কেউ। দ্রুত মেয়েটিকে উদ্ধার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় মানববন্ধন থেকে।
বুধবার, ৩০ জানুযারি দুপুরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে উপজেলার বড়খাতা এলাকায়।
লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের দু্ই পাশে দাঁড়িয়ে রচিত মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষজনও অংশ নিয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারের দাবি জানান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার পরিবারের লোকজনও। সময়ের সাথে সাথে মানববন্ধনে মানুষের উপস্থিতিও বাড়ছিল।
অন্যান্যের মধ্যে সেখানে ছিলেন বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামাল সোহেল এবং লালমনিরহাট জেলা পরিষদ সদস্য মর্জিনা বেগম।
মানববন্ধনে বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামাল সোহেল তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আসামিদের হাতীবান্ধা থানায় রিমান্ডে নিয়েছিল পুলিশ। স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর ভারতে পাচার করে দেয়ার কথাও স্বীকার করে এক সপ্তাহের মধ্যে মেয়েটিকে ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও আজ পর্যন্ত তাকে ফেরত পাওয়া যায়নি। তাই আমরা তাকে উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি’।
অপহৃত ছাত্রীর বাবা কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘আসামিরা আমার মেয়েকে ভারতে পাচার করেছে। আমি আমার মেয়েকে ফেরতসহ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’।
মানববন্ধনে ওই শিক্ষার্থীর মা, সহপাঠী লাবিবা আক্তার ও আমিনা খাতুন বক্তব্য রাখেন।
মেয়েটি ভারতে পাচার করা হয়েছে উল্লেখ করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাতীবান্ধা থানার এসআই মিজানুর রহমান বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামি পলাতক রয়েছে। বাকিরা উচ্চ আদালতে জামিনের পর নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে আটক হয়। সেখান থেকে ৩ আসামিকে রিমান্ডে আনা হয়েছিল। সেসময় তারা স্বীকার করে পাচারের কথা’।
হাতীবান্ধা থানার ওসি ওমর ফারুক জানান, মামলায় কারাগারে থাকা পাঁচ আসামির পূনরায় রিমান্ড চেয়ে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আদালতে আবেদন করা হবে। পাশাপাশি মেয়েটিকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ওসি।
জানা গেছে, অপহৃত স্কুল শিক্ষার্থীর বাড়ি বড়খাতা ইউনিয়নের একটি গ্রামে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীতে পড়তো। গত বছরের ১৪ অক্টোবর বাড়ি থেকে স্কুল যাওয়ার পথে অপহৃত হয় সে। এ ঘটনায় ওইদিন থানায় জিডি করা হয়। তাতেও কোনো খোঁজ না পেয়ে মেয়েটির বাবা বাদি হয়ে ছয় জনের নামে একই বছরের ২৬ অক্টোবর হাতীবান্ধা থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রধান বুড়া সারডুবি গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র (১৯) বর্তমানে পলাতক রয়েছে। অপর আসামি একই গ্রামের নলিত (৩৮), বাবুল (৪০), রহুল (২০), কৃষ্ণ চন্দ্র রায় (৪০) এবং ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরল ইসলামের ছেলে সুমন (৩৭) বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছে।
এমআরডি-৩০/০১/২০১৯