করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসায় রংপুরে এক ব্যাক্তির বাড়িসহ আশপাশের আটটি বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ওই ব্যক্তি সম্প্রতি তার শ্বশুরের সংস্পর্শে আসেন, যিনি করোনা আক্রান্ত বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেছে বগুড়ার স্বাস্থ্য বিভাগে দায়িত্বরত একাধিক কর্মকর্তা।
শনিবার, ৪ এপ্রিল বিকেলে রংপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিভিল সার্জন জানান, রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুষ্করণী ইউনিয়নের জানকি ধাপেরহাট এলাকার মাদরাসাপাড়া গ্রামে এক ব্যাক্তির বাড়িসহ আশপাশের আটটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ওই বাড়িগুলোতে প্রশাসনের উপস্থিতিতে লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
জানা গেছে, আক্রান্ত ওই ব্যক্তির বয়স ৫২ বছর। তিনি ঢাকায় কাওরান বাজারের একটি সবজি বাজারে নৈশপ্রহরী হিসেবে ১০ বছর ধরে কাজ করছিলেন।
গত রোববার ঢাকা ট্রাকে করে রংপুরে ফেরাত পথে বগুড়ায় পৌঁছে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ট্রাক চালক তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে যান। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করে তাকে।
খবর পেয়ে তার জামাই বগুড়ায় ওই হাসপাতালে শ্বশুড়কে দেখতে যান। পরে বুধবার আইইডিসিআর থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এতে তার শরীরে প্রাথমিকভাবে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয় বলে নিশ্চিত করেছে বগুড়ার স্বাস্থ্য বিভাগে দায়িত্বরত একাধিক কর্মকর্তা।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তারা বলেন, ওই ব্যক্তির করোনাভাইরাস পজিটিভ ফল এলেও তাঁরা ঢাকায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) আবার পরীক্ষা করাতে চান। তাই এখনই এ নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন না তাঁরা
এদিকে শ্বশুরের করোনা আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানার পর সঙ্গে থাকা ওই জামাতাসহ আরেকজন কাউকে না জানিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসেন। কয়েকদিন ধরে খোঁজ করার পর আজ সকালে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয় জেলা প্রশাসন। পরে ওই ব্যাক্তির বাড়িসহ আশপাশের আটটি বাড়ি লকডাউন করে করে দেয়া হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হাজী সোহেল রানা জানান, সকাল দশটার দিকে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ওই ব্যাক্তির বাড়িসহ আশপাশের আটটি বাড়িতে লাল পতাকা উত্তোলন করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তাদেরকে ঘর হতে বের হতে বারণ করা হয়েছে।
সেখানে গ্রাম পুলিশকে পাহারায় নিযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি খাবার সহায়তা পৌঁছে দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।