জুয়েলের গায়েবানা জানাজা, সুষ্ঠু তদন্তসহ জড়িতদের বিচার দাবি

লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে নির্মম হত্যার শিকার রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক লাইব্রেরিয়ান আবু ইউনুছ মো. সহিদুন্নবী জুয়েলের গায়েবানা জানাজা সম্পন্ন করা হয়েছে। জানাজা শেষে তার মরহুমের বিদেহি আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

শনিবার, ৩১ অক্টোবর দুপুরে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবি ও মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও জিলা স্কুলের প্রাক্তন এবং বর্তমান শিক্ষার্থী-শিক্ষকরাসহ তার আত্মীয়-স্বজনরা অংশ নেন।

জানাজা শুরুর পূর্বে নিহত সহিদুন্নবী জুয়েলের ভাই, সহকর্মী ও বন্ধুরা নারকীয় এই হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা বলেন, সদিদুন্নবী জুয়েল ছিলেন ধর্মভীরু ও সহজ সরল। সারাজীবন সে মানুষের সেবা করে গেছে। কিন্তু তাকে এমনভাবে হত্যা করা হলো, যা কোনোভাবেই মেনে নেয়ার মতো না৷ তার মতো হতাশাগ্রস্ত ও ভারসাম্যহীন মানুষের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা বিস্ময়ের। ওইখানে ধর্মকে পুঁজিকে কারো ইন্ধনে কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে মানুষকে উত্তেজিত করা হয়েছে।

এর আগে সকালে বঙ্গবন্ধু সড়কে জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে  মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে জুয়েল হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত, জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মানুষ এভাবে কাউকে পিটিয়ে হত্যার করার পর পুড়িয়ে ফেলতে পারে তা মর্মান্তিক। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোন কার্যক্রম দেখা যাচ্ছেনা। অতিদ্রুত এই নারকীয়, নিন্দনীয় ও ন্যক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি সাফিয়ার রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, বেরোবি শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ, সমাজ উন্নয়নকর্মী তানবীর হোসেন আশরাফী, বাসদ নেতা আব্দুল কুদ্দুছ প্রমুখ। এতে রংপুরের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষেরা অংশগ্রহণ করে প্রতিবাদ জানান।

প্রসঙ্গত; বৃহস্পতিবার , ২৯ অক্টোবর বিকেলে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে কোরআন অবমাননার অভিযোগ উঠে আবু ইউনুছ মো. সহিদুন্নবী ওরফে জুয়েল (৫১) এর বিরুদ্ধে। এর পরই সংঘবদ্ধ জনতা তাকে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন চত্বরে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে তার দেহে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়া হয়। নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

আরআই/রাতদিন