‘নীল আকাশের নীচে’ চলে গেলেন মৃণাল সেন

সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক ও মৃণাল সেন ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে স্বর্ণখচিত তিনটি নাম। এর মধ্যে একমাত্র জীবন্ত নামটিও গত ৩০ ডিসেম্বর, রোববার সকালে এক যুগের অবসান ঘটিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মৃণাল সেন নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান, একজন কিংবদন্তি। মৃত্যুর সময় তিনি নিজ বাড়িতেই ছিলেন। ঘড়ির কাটায় তখন সকাল সাড়ে দশটা।

১৯২৩ সালের ১৪ মে মৃণাল সেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারত পূর্ব বঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশ) ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা সম্পন্ন করে উচ্চ শিক্ষার জন্য কোলকাতা যান।

 ১৯৫৫ সালে ‘রাতভোর’ ছবি দিয়ে সিনেমা বানানোয় হাতেখড়ি হয় মৃণাল সেনের। যদিও সেই ছবিটি তেমন সাফল্যের মুখ দেখেনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর...

দ্বিতীয় ছবি ‘নীল আকাশের নীচে’ তাকে ব্যাপক পরিচিতি দেয়। তৃতীয় ছবি ‘বাইশে শ্রাবণ’ তাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠা দেয়। তার অমর সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে ‘ভুবনসোম’’, ‘কোরাস’, ‘মৃগয়া’, ‘আকালের সন্ধানে’, ‘পুনঃশ্চ’, ‘পরশুরাম’, ‘একদিন প্রতিদিনে’র মতো অসামান্য সব ছবি।

তিনি সর্বশেষ ছবিটি ‍নির্মান করেন ২০০২ সালে। শেষ ছবি ‘আমার ভুবন’। সর্বমোট ২৭টি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি, ১৪টি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ও চারটি তথ্যচিত্রের পরিচালনা করেছিলেন মৃণাল সেন।

কিংবদন্তী এই পরিচালকের ঝুলিতে রয়েছে ১৮টি জাতীয়, ১২টি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার। মস্কো, বার্লিন, কান ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত হন তিনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন মৃণাল সেন। ১৯৮১ সালে তাকে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করে ভারত সরকার। ২০০৫ সালে ভারত সরকার প্রদত্ত বিনোদন জগতের সর্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড পান তিনি।

সাহিত্য ও শিল্পে অনস্বীকার্য অবদানের জন্য তাকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান কমান্ডার অব দ্য অর্ডার অব আর্টস অ্যান্ড লেটারস (Ordre des Arts et des Lettres ) সম্মানে সম্মানিত করেছিল ফরাসি সরকার। সূত্র: জিনিউজ।

মতামত দিন