বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধনী উৎসবের মঞ্চ প্রস্তুত

মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকে পা রাখতেই উৎসবের আমেজ। ভেতর থেকে সাউন্ড বক্সে প্রচণ্ড জোরে গানের আওয়াজ- বোঝা গেল সাউন্ড সিস্টেমের পরীক্ষা চলছে!

প্রধান গেট পার করে দুপুর বেলা একটু সামনে বাড়তেই দেখা গেল কার্নিশের নিচে ছাগলের মাংস কাটাকাটি চলছে। ক্রিকেট একাডেমির প্রাকটিস মাঠের গেটের প্রবেশদ্বারের সামনে রান্নার বিশালসব উনুন জ্বলছে। বড় বড় হাঁড়িতে রান্না চলছে। পোলাও’র সুবাস! মাঠে মঞ্চ নির্মাণ থেকে শুরু করে বাকি কাজে যারা জড়িত আছেন তাদের জন্য এই ভুড়িভোজের আয়োজন।

চত্বর পেরিয়ে মাঠে ঢুকতেই দেখা গেল সবুজ মাঠ কালো কাপড়ের বেষ্টনি দিয়ে ভাগ করা। ফাঁকা অংশগুলোতে লাল কার্পেট বিছিয়ে সেখানে লাল চেয়ার সাজানো। অতিথিদের আয়েশের আগাম আয়োজন। স্টেডিয়ামের পূর্ব গ্যালারির ঠিক মাঝ বরাবর বিশাল আকৃতির মঞ্চ সাজানোর শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। স্টিলের পাতে তৈরি মঞ্চের চারধারে আলোর ঝাড় ঝুলছে। মঞ্চ আলোকময় করতে যারা আসবেন তাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন আয়োজকরা। বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধনী আয়োজনের মূল দায়িত্বে যিনি এবার, সেই বিসিবির পরিচালক শেখ সোহেলের মুখে তৃপ্তির হাসি- ‘আল্লাহর রহমতে সবকিছু ঠিকঠাক মতোই হচ্ছে। কোনো সমস্যা নেই।’

রোববার মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে জমজমাট করতে বিসিবি সাধারণ কর্মচারি থেকে শীর্ষ কর্তা সবাই ঘাম ঝরাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার, সন্ধ্যা সাতটায় আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধন করবেন। তাই চারধারে বাড়তি নিরাপত্তার নজর। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর একদল চৌকস অফিসার পুরো মাঠ ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি করলেন। গ্যালারি থেকে শুরু করে মাঠের প্রতিটি কোনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরীক্ষা করলেন তারা।

আয়োজনে কোথাও কোনো ঘাটতি থাকছে কিনা সেটা দেখার জন্য বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, পরিচালক নাঈমুর রহমান দুর্জয়, মাহবুব আনাম, এনায়েত হোসেন সিরাজ, ইসমাইল হায়দার মল্লিক ও বিসিবি’র প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন সুজন মঞ্চ এবং মাঠ চার দিন পরিদর্শন করেন।

মঞ্চ দেখতে আসা সংবাদকর্মী এবং নারী ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা মঞ্চকে পেছনে রেখে সোৎসাহে সেলফি তোলার সুযোগটা নেন! সালমান-ক্যাটরিনা এই মঞ্চে নাচবেন, জেমস-মমতাজ-সনু নিগম-কৈলাশ খের এখানে গাইবেন; এমন বিখ্যাত মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তো তোলাই যায়!

তবে অবাক করার ব্যাপার হলো যে অনুষ্ঠান ঘিরে মাঠের চারধারে বিসিবি’র এতো তৎপরতা সেই অনুষ্ঠানের টিকেট বিক্রির কাউন্টারে কোনো ভিড়ই চোখে পড়ল না। বলতে গেলে টিকেট ঘরের সামনে কাউকেই যে পাওয়া গেল না! এক হাজার, আড়াই হাজার, পাঁচ হাজার ও দশ হাজার টাকা মূল্যে টিকেট কিনে গান শোনা ও নাচ দেখার আগ্রহে কি ভাটা পড়ল?

বিসিবির পরিচালক শেখ সোহেল তা মানতে রাজি হলেন না- ‘আমার কাছে সালমান ও ক্যাটরিনার এজেন্টরা বরং উল্টো জানতে চেয়েছে এতো কম দামে কেন আমরা টিকেট বিক্রি করছি। আমরা তাদের বলেছি সাধারণ দর্শকরাও যাতে সরাসরি এই অনুষ্ঠান দেখতে পারে সেজন্যই টিকেটের মূল্য কম রাখা হয়েছে।’

এনএ/রাতদিন