পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রচারণার শেষ মুহুর্তে বুধবার মাঠে সরব উপস্থিতি ছিল প্রার্থীদের। বিশেষত, সাদ এরশাদ, আসিফ ও রিটা রহমানের প্রচারণায় উত্তাল ছিলো মহানগরী। পথসভা, সভা, গনসংযোগ, একান্ত বৈঠকে ব্যস্ত সময় পার করেছেন তারা।
এদিকে নির্বাচনে মনিটরিং করতে রংপুর এসেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, নির্বাহী সদস্য তাবিথ আউয়ালসহ দুই জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
অন্যদিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন ভোট গ্রহনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী এরশাদ পুত্র রাহগীর আল মাহী এরশাদ ওরফে সাদ এরশাদ বুধবার সকালে রংপুর মহানগরীর সিটি বাজার, প্রেসক্লাব, সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় গনসংযোগ করেছেন। বিকেলে তিনি শাপলা চত্বর যৌথ নির্বাচনী পথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
এদিকে রংপুরে বুধবার দুপুরে বিকেলে রংপুর এসেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, বিরোধী দলীয় মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, আদেলুর রহমান আদেল এমপিসহ জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
আচরণবিধির কারণে তারা রংপুর সদর আসনের বাইরে বেসরকারী বিনোদন স্পট ভিন্নজগতের অবস্থান করছেন। সেখানেই তারা নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন। সেখান থেকেই পুরো নির্বাচনী কার্যক্রম মনিটরিং করছেন। এছাড়াও শিরিনপার্কে মহাজোটের যৌথ সভায় বক্তব্য রাখেন তারা।
অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমান বুধবার সাতমাথা, মডার্ন মোড়, নজিরের হাট, পালিচড়ায় পথ সভায় মিলিত হন। দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষে তাকে নিয়ে নেতাকর্মীরা নগরীতে গনসংযোগ করেন। এসময় পায়রা চত্বর, গ্রান্ড হোটেল মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় গনসংযোগ করেন তিনি।
অন্যদিক স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ নগরীর সেনপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় গনসংযোগ ও পথসভা করেন। পরে তিনি সালেক মার্কেটের তৃতীয় তলায় দোকান মালিক সমিতির সাথে বৈঠক করেন।
এসময় আসিফ অভিযোগ করে বলেন, মহাজোট প্রার্থী সাদ এরশাদ আচরণবিধি মানছেন না। প্রশাসনও সে বিষয়ে কোন মাথা ঘামাচ্ছে না, এটা উদ্বেগজনক।
অপরদিকে হোটেল নর্থ ভিউয়ে নির্বাচন বিষয়ে সভা করেছেন বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও ছাত্র মিশন। দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ওয়াসিমের সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দলটির চেয়ারম্যান ড. মোস্তাফিজার রহমান ইরান।
এছাড়াও এনপিপি’র আম প্রতিকের শফিউল আলম, মাছ প্রতিকের গণফ্রটর কাজী মাঃ শহীদুল্লাহ এবং খলাফত মজলিসের দেয়াল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী তৌহিদুর রহমান মন্ডল বিভিন্ন এলাকায় গনসংযোগ করেন।
সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন:
রংপুর-৩ শুন্য আসনে উপ-নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রংপুর আ লিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন জানান, আমরা ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এখানে ১৭৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহনের ১৭৫ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১০২৩ সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার এবং ২০৪৬ জন পোলিং অফিসারকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ৪৯টি ঝুকিপুর্নসহ ১৭৫টি ভোটকেন্দ্রের ১০২৩টি গোপনকক্ষে ভোট গ্রহন করা হবে।
তিনি জানান, রংপুর সদর উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের ৯ থেকে ৩৩ নং ওয়ার্ডের এই সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৪১ হাজার ২২৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ২০ হাজার ৮২৩ এবং নারী ভোটার ২ লাখ ২০ হাজার ৪০১ জন।
তিনি আরও জানান, সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহনের জন্য ভোটের আগের দিন, ভোটের দিন এবং ভোটের পরের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, আনসার, ভিডিপি, পুলিশ ও বিজিবি, র্যাবের পোশাকি ও সাদা পোশাকি আইনশৃঙখলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। পরিচালনা করা হবে ভ্রাম্যমাণ আদালত ।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুলাই রংপুর সদর ৩ আসনের এমপি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিরোধী দলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর ১৬ জুলাই আসনটি শুন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৫ অক্টোবর শনিবার এই আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
এনএইচ/রাতদিন