রংপুরের একটি আদালত মাত্র দুই কার্যদিবসেই ধর্ষণ মামলার রায় দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর বিকেলে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোস্তফা পাভেল রায়হান এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছেন বিচারক। । তিনি জামিনে ছিলেন।
মামলা ও আদালত সূত্র জানায়, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বিশ্বনাথ গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী মোস্তাফিজার রহমান (৩৬)। তিনি তার ফুপাতো বোনকে (২৬) শারীরিক সম্পর্কের জন্য প্রস্তাব দেন। কিন্তু এতে ওই নারী রাজি হননি। এ নিয়ে তাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন মোস্তাফিজার। একপর্যায়ে ওই নারী ২০১৯ সালের ৮ মে অন্যত্র বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
তবে বিয়ের পর মোস্তাফিজার ওই নারীর স্বামীকে দুজনের মাঝে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল বলে জানালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এই সুযোগে মোস্তাফিজার তাকে আবারো কুপ্রস্তাব দেন এবং দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুজনের সম্পর্কের বিষয়টি জানার পর মোস্তাফিজারের স্ত্রী সংসার করবেন না বলে স্বামীর বাড়ি থেকে চলে যান।
এরপর গত বছরের ২৮ অক্টোবর মোস্তাফিজার তার প্রেমিকাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে ওঠেন এবং সেদিনসহ পরবর্তী তিনদিন তাকে ধর্ষণ করেন। আশপাশের লোকজন বিষয়টি জানলে ওই নারী মোস্তাফিজারকে বিয়ের জন্য চাপ দেন।
কিন্তু মোস্তাফিজার এতে রাজি না হওয়ায় চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি কাউনিয়া থানায় এজাহার দায়ের করতে যান ওই নারী। থানা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অজুহাতে তা গ্রহণ না করায় ৮ জানুয়ারি মোস্তাফিজারকে আসামি করে আদালতে ধর্ষণের মামলা করেন তিনি। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন আদালত।
গত ২ সেপ্টেম্বর মামলার চার্জ গঠনের পর গতকাল সোমবার, ২৩ নভেম্বর পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও আজ মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক শেষে রায় দেন বিচারক। রায়ে আসামি মোস্তাফিজার রহমানকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মাকজিয়া হাসান বলেন, ‘যথাযথভাবে সাক্ষী প্রমাণ উপস্থিত করতে না পারায় বিচারক আসামিকে খালাস দিয়েছেন। তবে যেখানে বছরের পর বছর এ ধরনের মামলা ঝুলে থাকে সেখানে দুই কার্যদিবসে রায় দেয়ায় আমরা সন্তুষ্ট’।
আসামি পক্ষের আইনজীবি রইচ উদ্দিন বাদশা বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারক আসামিকে খালাস দিয়েছেন। দুই কার্যদিবসে রায় দেয়ায় আমরা সন্তুষ্ট’।
এবি/রাতদিন