রংপুরের বঙ্গবন্ধুপ্রেমী রফিকুল ইসলাম (৫৯) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে পৌঁছেছেন। সেখানে বঙ্গবন্ধুর পোর্ট্রেট এঁকে ও কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগিয়ে নিজের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ করলেন তিনি। পেশায় রিকশাচালক রফিকুল গত ১৩ জুন রংপুর থেকে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করেন।
শুক্রবার, ১৯ জুলাই বিকেলে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে রফিকুল বঙ্গবন্ধুর কবরে ফাতেহাপাঠ এবং ১৫ আগস্ট শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত করেন। এরপর তিনি বঙ্গবন্ধু ভবনে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লেখেন এবং স্বাক্ষর করেন।
রফিকুল একজন বঙ্গবন্ধুপাগল। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ মুক্তিযুদ্ধে যেতে তাকে চরমভাবে অনুপ্রেরণা জোগায়। কিন্তু বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়ায় ওই সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধে যেতে পারেননি। এনিয়ে তার বুকে অনেক কষ্ট জমাট বেঁধে আছে, যা আজও তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়।
রংপুরের জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে গত ১৩ জুন তিনি টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করেন। ১১টি জেলা পেরিয়ে শুক্রবার বিকেলে তিনি টুঙ্গিপাড়া পৌঁছান।
রফিকুল ইসলাম বলেন, সংসারের ভার ছেলেদের ওপর ছেড়ে দিয়ে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যেই তার ঘর থেকে বের হওয়া। টুঙ্গিপাড়ায় এসে তার মনের আশা পূরণ হয়েছে।
তিনি জানান, টুঙ্গিপাড়া সফর শেষে হেঁটেই তিনি ঢাকায় ফিরবেন। আগামী ৪ আগস্ট গণভবনে বঙ্গবন্ধুর পোর্ট্রেট এঁকে এবং একটি কৃষ্ণচূড়া গাছের চারা লাগিয়ে তিনি এ পদযাত্রা শেষ করবেন।
টানাপোড়েনের সংসারে স্ত্রী রাশিদা, দুই মেয়ে ও তিন ছেলেসহ বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে রংপুর শহরের তাজহাট বাবুপাড়া এলাকায় বসবাস করেন রফিকুল ইসলাম।
রিকশার পাশাপাশি প্রেস শ্রমিক হিসেবেও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে একটু সময় পেলেই ছবি আঁকেন তিনি। রফিকুলের ছবি আঁকার প্রতি ঝোঁক তাকে আরও বেশি এগিয়ে দিয়েছে। যেখানে যান, সুযোগ পেলেই বঙ্গবন্ধুর পোর্ট্রেট আঁকেন তিনি। এ যেন তার নেশা। রংপুর থেকে টুঙ্গিপাড়ায় আসার পথে যেসব জেলা অতিক্রম করে এসেছেন সেসব জেলায় একটি করে বঙ্গবন্ধুর ছবি এঁকেছেন তিনি। রোপণ করেছেন একটি করে কৃষ্ণচূড়া গাছ।
এইচএ/রাতদিন