পায়ে শিকল বেঁধে মো. মারুফ হোসেন (১০) নামের এক শিশু শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে দিনাজপুরের বিরামপুরে ত্বালিমউদ্দীন ইসলামীয়া মাদরাসার মোহতামিমের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর রাতে শিশুটির বাবা মাছুম মিয়া বাদী হয়ে মামলা করলে রাতেই মুহতামিম লুৎফর রহমানকে আটক করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার দিওড় ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামে ত্বালিমউদ্দীন ইসলামীয়া মাদরাসার পাশে ধানক্ষেত থেকে শিশু শিক্ষার্থী মো. মারুফ হোসেনকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে শিশুটিকে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়।
নির্যাতিত শিশু পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার মহারাজপুর এলাকার মো. মাছুম মিয়ার ছেলে। আটক মুহতামিম লুৎফর রহমান জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার রুদ্রানী (মণ্ডলপাড়া) গ্রামের সাইফুর রহমানের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দিওড় ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামে ত্বালিমউদ্দীন ইসলামীয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী মারুফ হোসেন গত ১ মাস যাবৎ ওই মাদরাসায় লেখাপড়া করছে। মঙ্গলবার দুপুরে ওই মাদরাসার মুহতামিম লুৎফর রহমান তার অফিস কক্ষে দুই পায়ে লোহার শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করে লাঠি দিয়ে হাত, মাথা, পিঠসহ শারীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন এবং শিশুটির ডান পা ও বাম পায়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করেন। অমানবিক নির্যাতনের ফলে শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়লে মাদরাসার মুহতামিম অফিস কক্ষের বাইরে যায়।
পরে, সন্ধ্যার দিকে শিশুটি কৌশলে অফিস থেকে বের হয়ে পার্শ্ববতী গ্রামের তৈয়বপুর চৌধুরী পাড়ায় ধানক্ষেতে মুমূর্ষূ অবস্থায় পড়ে থাকে। এলাকাবাসী তাকে দেখে থানায় খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তার বাবার হেফাজতে দেয়।
মুহতামিম মো. লুৎফর রহমান বলেন, শিশুটির মা বলেছিল যে পড়া বা বেয়াদবি করলে শাসন করতে। আমি শাসন করে ভুল করেছি।
বিরামপুর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, শিশুটিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। শিশুটির বাবা ‘শিশু নির্যাতন আইন’-এ মামলা করলে রাতেই মুহতামিমকে আটক করে আজ বুধবার দিনাজপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এবি/রাতদিন