‘ভাওয়াইয়া রাজা’ কিংবা ‘ভাওয়াইয়ার রাজকুমার’ আবার অনেকেই ডাকেন ‘ভাওয়াইয়ার ফেরিওয়ালা’ বলে। তিনি ভাওয়াইয়া শিল্পী সফিউল আলম রাজা। না ফেরার দেশে চলে গেলেন সেই জাদুকারী ভাওয়াইয়া শিল্পী ।
আজ রবিবার, ১৭ মার্চ দুপুরে রাজার মরদেহ উদ্ধার করা হয় মিরপুরে তার পরিচালিত স্কুল ‘কলতান সাংস্কৃতিক অ্যাকাডেমি’র একটি কক্ষ থেকে।
তাঁর গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের চিলমারীতে।
রাজার দীর্ঘদিনের সহকর্মী রফিকুল রঞ্জু রাতদিননিউজকে জানান, শনিবার রাতে বেসরকারী একটি টিভি চ্যানেলে প্রোগ্রাম শেষে কলতান অ্যাকাডেমিতে এসে ঘুমিয়ে পড়েন রাজা। সেই ঘুম থেকে আর জাগলেন না তিনি। আজ রবিবার দুপুরে কাজের বুয়া গিয়ে কলতান অ্যাকাডেমিতে গিয়ে অনেকক্ষন দরজায় নক করেও যখন সাড়া পাচ্ছিলেন না তখন রাজার বাসায় খবর দেন তিনি। পরে মিরপুরের বাসা থেকে রাজার পরিবারের সদস্যরা এসে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকেন। ঢুকে দেখেন রাতে যেভাবে ঘুমিয়েছিলেন সেভাবেই পড়ে আছে রাজার লাশ। পড়ে পুলিশে খবর দেয়া হয়।
রাজা সংগীতের তাত্ত্বিক বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করেন ওস্তাদ নুরুল ইসলাম জাহিদের কাছ থেকে । তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘প্রথম’ গ্রেডের এবং বাংলাদেশ বেতারের ‘বিশেষ’ শিল্পী।
তার জীবন কালে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত বেঙ্গল বিকাশ প্রতিভা অন্বেষণে লোকসঙ্গীতে ভাওয়াইয়া গান নিয়ে সারাদেশে মধ্যে শ্রেষ্ঠমান বিজয়ী নির্বাচিত হন রাজা।
রাজার দুইটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। প্রথমটি বেঙ্গল ফাউন্ডেশন থেকে রাজার একটি মিক্সড অ্যালবাম এবং দ্বিতৃয় টি ভায়োলিন মিডিয়া থেকে একক অ্যালবাম ‘কবর দেখিয়া যান’ প্রকাশিত হয়।
ভাওয়াইয়ার প্রচার-প্রসারে জন্য ‘ভাওয়াইয়া গানের দল’ নামে একটি সংগঠন রাজা ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ।তিনি ভাওয়াইয়া গানের পাশাপাশি সাংবাদিকতাও করেন।
রাজা ২০১১ সালে রাজধানীতে ‘ভাওয়াইয়া স্কুল’ নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন । তিনি চলচ্চিত্র ‘উত্তরের সুরে’ প্লেব্যাক করেছেন। চলচ্চিত্রটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্তও হয়েছে। রাজা একজন সিনিয়র সাংবাদিক। দীর্ঘ ২৪ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে প্রায় ১৪ বছরের বেশি সময় দৈনিক যুগান্তরে কাজ করেছেন। তিনি ২৪ বছর সাংবাদিকতা তার মধ্যে দৈনিক যুগান্তরে কাজ করেছেন প্রায় ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে ।
রাজা অনেক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন ।
জীবনের সর্বশেষ তিনি চিফ রিপোর্টার হিসেবে অনলাইন সংবাদমাধ্যম প্রিয়ডটকমে কর্মরত ছিলেন। মিরপুরের শফিউল আলম রাজার ‘কলতান’ নামে একটি গানের স্কুল আছে।