শিগগিরই পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকায় নামবে: বাণিজ্যমন্ত্রী

শিগগিরই দেশের বাজারে  পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকায় নেমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিকে পেঁয়াজের দাম ৩৬-৩৭ রুপিতে নেমে এসেছে। এখন তারা তাদের প্রয়োজনেই পেঁয়াজ (বাংলাদেশে) রফতানি শুরু করবে। আবার আগামী মাসের প্রথম দিকে দেশি পেঁয়াজও পুরোপুরি (বাজারে) ওঠা শুরু করবে। তাই শিগগিরই পেঁয়াজের দাম ৫০-৬০ টাকায় নেমে আসবে বলে আশাবাদী আমরা।

আজ সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি  বিকেলে বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্য সম্পর্কিত বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বেশ কিছুদিন থেকে বাজারে দেশি পেঁয়াজ এসেছে, তারপরও দাম কমছে না- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, দেশি পেঁয়াজ ফুল স্পিডে এখনো আসেনি। আমি গত ২৪ জানুয়ারি পেঁয়াজ উৎপাদনের অঞ্চলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে বুঝলাম, আগামী মাসের প্রথম থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহে ফুল স্পিডে পেঁয়াজ ওঠা শুরু করবে। সে সময়টায় পেঁয়াজের দাম কমবে।

তিনি বলেন, ভারতের নাসিকের যে মার্কেট থেকে আমরা পেঁয়াজ আমদানি করি সেখানেও পেঁয়াজের দাম কমেছে। কিন্তু ওরা এখনো সরকারিভাবে পেঁয়াজ রফতানির সিদ্ধান্তটা নেয়নি। গতকাল নাসিকে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল ৩৬-৩৭ রুপি। কলকাতার বাজারে দাম ছিল ৪৫ রুপি, আমাদের টাকায় সেটা ৫৫-৬০ টাকা।

‘(ভারতে) কৃষকদেরও চাপ রয়েছে, তাই সেখানে দাম ২৫-৩০ টাকায় নেমে এলেই ভারত হয়তো রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেবে। ভারতের মোট পেঁয়াজের ৩৮ শতাংশ হয় নাসিকে। নাসিকের পেঁয়াজই আমরা আমদানি করি’- যোগ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ভারতের উত্তরের যে পেঁয়াজ, সেগুলো তারা রফতানি শুরু করেছে। কিন্তু আমাদের জনগণ সে পেঁয়াজ খায় না। আমরা নাসিকের পেঁয়াজই পছন্দ করি। আমরা অপেক্ষায় রয়েছি তারা নাসিকের পেঁয়াজ থেকে কখন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। দামটা আরও একটু কমলে তাদের নিজস্ব চাপেই তারা (নিষেধাজ্ঞা) প্রত্যাহার করবে। গতকালই আমাদের দূতাবাস থেকে চিঠি পেয়েছি। তারা এসব কথাই লিখেছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের পেঁয়াজের দাম এবার অনেক বেড়ে গেছে। হয়তো ফুল পেঁয়াজ উঠলেই সেটা কমে যাবে। কিন্তু দাম এতোটা কমা ঠিক হবে না, যাতে কৃষক দাম না পায়। ভোক্তার বিষয়টা যেমন নজরে রাখতে হবে তেমনি কৃষকদের বিষয়টাও দেখতে হবে। ফাইনালি আমরা যদি পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ না হতে পারি, তাহলে আমাদের সমস্যা থেকেই যাবে।

তিনি বলেন, আমাদের পেঁয়াজের ঘাটতি ৮-৯ লাখ টন। বছরের পর বছর যদি পরের ওপর নির্ভর করতে হয়, তাহলে যখনই ভারত রফতানি বন্ধ করে দেবে, তখনই সমস্যা দেখা দেবে। তাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে কৃষকদের দাম পেতে হবে। ন্যায্যমূল্য না পেলে তারা পেঁয়াজ উৎপাদন করবে না।

অসাধু ব্যবসায়ীদের বিষয়ে টিপু মুনশি বলেন, দাম বেশি রাখায় ৩ হাজার ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে। আমরা খুব শক্ত অবস্থানে যেতে চাই। কিন্তু কখনো কখনো ব্যবসায়ীরা এমন অবস্থার সৃষ্টি করে যে, টোটাল মার্কেট থেকেই আউট করে দেন। এজন্য আমাদের আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটা হচ্ছে সাপ্লাই বাড়ানো। তাহলেই ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিতে পারবেন না।

এবি/রাতদিন