ঢালিউড কুইন হিসেবে পরিচিত চিত্রনায়িকা মৌসুমী। দীর্ঘ সময় ধরে রুপালী পর্দা কাঁপানো এ নায়িকা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিলেন। তার নৌকার পক্ষে থাকার বিষয়টি গণমাধ্যমেও ওঠে আসে।
নির্বাচনের পর জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। সেকারণেই তিনি রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন। সংগ্রহ করেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্রও । আর মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়েও আশাবাদী আরিফা জামান মৌসুমী ।
কিন্তু মনোনয়নপত্র কেনার পর একটি পুরোন ছবি যেন বিতর্কের তীর বেঁধেছে! যে ছবি বেশ পীড়া দিচ্ছে তাকে, বিপদেও ফেলে দিচ্ছে অনেকটা।
কারণ গত কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে মৌসুমীর সেই পুরনো ছবিটি দেখা গেছে। ইতোমধ্যে তা সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠেছে। যে ছবিতে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানও ছিলেন।
আর তাই মৌসুমীর রাজনৈতিক অবস্থান কিংবা আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন চলে আসে। কেউ কেউ তার অবস্থান ভিন্ন রাজনৈতিক ধারায় দেখছে। ফলে সেই প্রশ্নের উত্তর দিতেই বৃহস্পতিবার এফডিসিতে মিডিয়ার মুখোমুখি হন চিত্রনায়িকা মৌসুমী।
এনিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মৌসুমীর ভাষ্য, ‘আমি তো আগেই বলেছি- এগুলো নিয়ে কথা বলার কিছু নেই। শিল্পী হিসেবে অনেকেই আমাকে ডেকেছেন। গিয়েছি। আমি আগে কখনও বলিনি, কোনো দলের কিংবা কারও হয়ে কাজ করতে চাই। তা হলে এই প্রশ্ন কেন আসছে? আমি এত বছর সততার সঙ্গে কাজ করেছি, অমন প্রশ্ন তুলে আমাকে ¤øান করে দেবেন না প্লিজ।’
বিভিন্ন সুত্র মতে, বিএনপি আমলে অনেক অনুষ্ঠান হয়েছে দেশজুড়ে । নায়িকা আর গায়িকারাই এই অনুষ্ঠানগুলো মাতিয়ে রাখতেন । আর এমন অনেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকতেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান।
ওই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এমনি একটি উৎসবে জনৈক গায়িকা তার গানের মধ্য দিয়ে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বাবা ও তারেক রহমানকে ভাই হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন বলে জানা গেছে। নায়িকা হিসেবে মৌসুমীও উপস্থিত ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। সেই ছবিই ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ফলে এনিয়ে চিত্রনায়িকা মৌসুমীর মন্তব্য হচ্ছে, পুরনো ছবিটি এই সময়ে সামনে এনে তার রাজনীতিতে আসার উৎসাহকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আর যারা তা করছেন, তাদের এই পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনশরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া মৌসুমীর সাফ কথা, তিনি কখনই বিএনপিতে যুক্ত ছিলেন না। বিএনপির সহযোগী সংগঠন-জাসাস আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
কেন সংসদে যাওয়ার আগ্রহ হলো সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মৌসুমী বলেন, ‘কিছু দিন আগে আমি প্রধানমন্ত্রীর একটি সাক্ষাৎকার পড়লাম। তিনি বলেছেন, এই পঞ্চাশ আসন (সংরক্ষিত নারী আসন) তিনি নিজে নির্ধারণ করবেন। তখন আমার মনে হলো, আমারও আবেদন করা উচিত। তাই হুট করে মনোনয়ন কিনে ফেললাম’। প্রধানমন্ত্রীর ওই সাক্ষাৎকারই তাকে অনুপ্রাণিত করেছে বলে জানান মৌসুমী।
ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত ছিলেন মৌসুমী। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি নারী ও শিশুদের জন্য কাজ করছেন। সংসদ সদস্য হতে পারলে নারীদের নিয়ে আরও বেশি কাজ করবেন বলে জানান মৌসুমী।
এমআরডি-১৮/০১/২০১৯