উজানে ক্রমাগত ভারী বৃষ্টি ও ঢলে হঠাৎ করেই বেড়েছে তিস্তার পানি। আকস্মিক পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তা অববাহিকার বসতবাড়ি ও আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। উপদ্রুত পরিবারগুলো বসতঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে উঁচু স্থানে।
বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টায় তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাত ৯টায় পানি ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৫২.৭০ (বিপদসীমা ৫২.৬০) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এলাকাবাসী জানান, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়শিঙ্গেশ্বর, টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের দোলাপাড়া, তিস্তা বাজার, চরখড়িবাড়ি, পূর্বখড়িবাড়ি, খালিশাচাঁপানী ইউনিয়নের বানপাড়া ছোটখাতা, বাইশপুকুর ও ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের সোনাখুলী, ফরেস্টের চর গ্রামগুলোর বসতঘরে নদীর পানি প্রবেশ করেছে।
বসতঘরগুলোর ভিতর দিয়ে হাঁটুসমান পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অনেকে নদীর ডানতীরের বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।
পুর্বছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, ঝাড়শিঙ্গেশ্বর গ্রামের ৫ শতাধিক পরিবারের বসতঘরে বন্যায় তলিয়ে গেছে।
টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মইনুল হক বলেন, তার এলাকার দোলাপাড়া, তিস্তাবাজার, চরখড়িবাড়ি, পূর্বখড়িবাড়ি গ্রামগুলোর বাড়িঘর হাঁটুসমান পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
খালিশা চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার বলেন, ছোটখাতা ও বানপাড়া গ্রামের মানুষজন ডানতীর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।
ঝুনাগাছ চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ছাতুনামা ও ফরেস্টের চর এলাকায় ৫ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করে। বন্যার কবলে নিচু এলাকার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, উজানে ভারী বৃষ্টি ও ঢলের কারণে তিস্তা নদীতে পানি হু হু করে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
রাত ৯টায় তা বিপদসীমা অতিক্রম করে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার সকাল ৬টায় বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উজানের ঢল সামাল দিতে খুলে রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট।
উপদ্রুত এলাকা থেকে পরিবারগুলোকে উঁচু স্থান ও আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে।