বেরোবিতে ২ শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে মধ্যরাতে বিক্ষোভ

ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ‘জোর করে’ মুচলেকা নিয়ে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে মধ্যরাতে দুই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় থেমে থেমে বিক্ষোভ করা হয়।

এ ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।  

রোববার, ২৭ জানুয়ারি দিবাগত রাতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) এ ঘটনা ঘটে। রাত সোয়া একটায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় সেখানে বিক্ষোভ চলছিল।

জানা গেছে, রোববার এফ ইউনিটের ২য় মেধাতালিকায় থাকা রাকিব হাসান নামের এক শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষের ভর্তি সাক্ষাতকার দিতে আসেন। এবছরের ভর্তি পরীক্ষায় সে এফ ইউনিটের চতুর্থ শিফটে ৮০ তম স্থান পায়।

সকালে সাক্ষাতকারের সময় ‘প্রবেশপত্র জাল’ এমন অভিযোগে রাকিবকে প্রথমে আটক করে সহকারী প্রক্টর আতিউর রহমান ও সাক্ষাতকার বোর্ডে উপস্থিত অন্য শিক্ষকরা। পরে দুপুর একটা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।  

এর ফাকে দায়িত্বরত শিক্ষকেরা তাকে পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক ‘ভর্তি জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্ত’ মর্মে লিখিত নেয়। এর প্রতিবাদ জানালে তাকে নানা  হুমকি দেওয়া হয়।

রাতে ওই শিক্ষার্থীর কাছে দ্বিতীয় দফায় আরও একটি লিখিত নেওয়া হয়। এরপর রাত সাড়ে দশটার দিকে রাকিব হাসানকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

খবর ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি হল থেকে শ’ দুয়েক শিক্ষার্থীকে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় প্রক্টর ড. ফরিদ উল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর আতিউর রহমানকে প্রায় দুই ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।  

ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা  ছাত্রলীগ সভাপতি তুষার কিবরিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার উপস্থিতিতে রাকিবের কাছে জোর করে লিখিত নেওয়া হয়। আমি এর প্রতিবাদ জানালেও প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয়নি’।

সহকারী প্রক্টর আতিউর রহমান জোর করে লিখিত নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তার(রাকিব) কথা ও ব্যবহারে অসংগতি থাকায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ‘।

যোগাযোগ করা হলে প্রক্টর ড. ফরিদ উল ইসলাম বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের ছবি, স্বাক্ষর ও হাতের লেখায় অমিল এবং কথাবার্তায় অসংগতি পরিলক্ষিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে’। 

বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মহিবুল ইসলাম দুই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে’।

এইচএ/২৮.০১.১৯