‘ব্লাউজ’ নিয়ে মুখ খুললেন অঞ্জনা

‘ব্লাউজ’ নিয়ে ট্রল করে দেশের নারীদের কি অসম্মান করা হচ্ছে না? কিন্তু অনেক নারীদেরকেও দেখছি ট্রলে মেতেছেন! তারা কী করে এমনটা পারেন?’ ‘ব্লাউজ’ নিয়ে ট্রল প্রসঙ্গে অভিনেত্রী অঞ্জনা সুলতানা এমনই প্রশ্ন তুলেছেন।

তিনি দাবি করে বলেন, ‘আমি এই কথা বলিনি যে সারাদেশের নারীদের ব্লাউজ আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। আমি অন্য কিছু বলেছিলাম। কিন্তু সেই বিষয়টাকে এড়িয়ে ব্লাউজকেই জাতীয় ইস্যু বানানো হলো।’

চলচিত্র শিল্পী অঞ্জনা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও সক্ষমতার প্রসঙ্গে
ব্লাউজ নিয়ে একটি মন্তব্য করেছিলেন বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে। আর ওই মন্তব্যটিই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব দ্রুতই ট্রল আকারে ভাইরাল হয়ে যায়।

আজ সোমবার এনিয়ে অঞ্জনা বলেন, ‘আমি বলতে চেয়েছিলাম, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গ্রামীণ যে অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে তার কথা। আজ থেকে ৩০-৩৫ বছর এগে যখন আমরা গ্রামে গঞ্জে শুটিংয়ে যেতাম দেখতাম নিম্নবিত্ত নারীরা একটা শাড়ি প্যাঁচিয়ে শুটিং দেখতে আসছেন। তাদের শরীরে কোনো ব্লাউজ ছিলো না। শুটিং ইউনিটের সবাই তাদের দেখে বিব্রত হতো। জিজ্ঞেস করতাম, তারা কেন ব্লাউজ পরে না। জবাব দিতো, ‘অর্থের অভাবে ব্লাউজ কেনার সামর্থ হয় না। বহু কষ্টে একটা শাড়ি জুটে।’

তিনি আরও বলেন ‘সেইসব অঞ্চলে এখন বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। গ্রামের নারীরা এখন
ব্লাউজ পরছে, ম্যাক্সিও পরছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এসেছে। সেখানকার মানুষ এখন নিজেদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারছে। তাই নারীরাও নিজেদের জীবন যাপনে পরিবর্তন আনতে পেরেছেন। এটা গত দশ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের স্রোতেই হয়েছে। এটাই বলতে চেয়েছি,’ বলে উল্লেখ করেন অঞ্জনা।

বিশিষ্ট এই অভিনেত্রী বলেন ‘হয়তো ওই টকশোতে সময়ের অভাবে কিছু কথা খুব সংক্ষিপ্ত বলেছি। কিন্তু কী বলতে চেয়েছি সেটা বুঝেও না বোঝার ভান করে ব্লাউজ নিয়ে ট্রল করা শুরু করেছেন। উদ্দেশ্য হলো আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার উন্নয়নকে পাশ কাটানো।’

যারা এমনটা করলেন তাদের মানসিকতায় সমস্যা আছে বলে মনে করেন এক সময়ের রূপালী পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা। তিনি বলেন, ‘আমাকে হাসির পাত্রী বানানোর একটা অপচেষ্টা হয়েছে। কিছু মানুষ থাকেই যারা অন্যের অসম্মান করতে পারলে আনন্দ পান।”

অঞ্জনা বলেন ‘এই দেশে কোনোকিছু নিয়ে কথা বলাই মুশকিল হয়ে পড়েছে । মূল বিষয়কে এড়িয়ে খুব হালকা কিছু নিয়ে মেতে উঠে সবাই। অথচ এই দেশের মানুষই উঠতে বসতে বলে যে এখানে নাকি কথার স্বাধীনতা নেই,’।

টকশোর ওই ভিডিও সম্পর্কে অঞ্জনা বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি আমি দেখেছি। সেটি কিছু অংশ কেটে ট্রল করা হচ্ছে। আমি কী বলতে চেয়েছি তা বুঝতে সক্ষম হয়নি অনেকেই। অনুষ্ঠানে আমার পাশে পোশাক শিল্পের একজন ব্যক্তি ছিলেন। সেখানে পোশাক শিল্পের উন্নয়ন নিয়ে কথা হচ্ছিলো। সঙ্গত কারণেই আমি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের পোশাককে উদাহরণ হিসেবে টেনেছি। আগের তুলনায় বর্তমানে পোশাকের সহজলভ্যতা নিয়েও কথা বলতে চেয়েছি। যা আমার নিজের অর্জিত অভিজ্ঞতা থেকে বলা।”

‘আমার মনে হয় পৃথিবীতে আর কোনো দেশে মানুষকে অপমান করে এত উল্লাস করে না কেউ। এখানে একজন মানুষের বয়স, শিক্ষা, রুচিবোধ, অভিজ্ঞতা, সুনামকে কেউ গুরুত্ব দেয় না। ইস্যু একটা হলেই হলো যোগ করেন অঞ্জনা।’

‘আমি কিন্তু ওই টক-শোতে অনেক ইতিবাচক কথা বলেছি। সেগুলো কিন্তু ভাইরাল হয়নি। তবুও আমার মন্তব্যে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমাকে মাফ করবেন” বলে উল্লেখ করেছেন অভিনেত্রী অঞ্জনা।

—– বাংলা ডট রির্পোটের সৌজন্যে

এমআরডি-০৪/২৪.১২.২০১৮

মতামত দিন