সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, আগস্ট বাঙালি জাতির জন্য শোকাবহ মাস। ‘৭৫ এর আগস্ট মাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। এ আগস্ট মাসেই বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। আবার এ মাসেই বঙ্গমাতা ও শেখ কামালের জন্মদিন। যুগপৎ আনন্দ-বেদনার এ মাসে এবং বৈশ্বিক মহামারি করোনার এ দুর্যোগকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সফলভাবে করোনা মোকাবেলা করে যেভাবে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তা সারাবিশ্বের জন্যই রীতিমত চমক ও বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও আদর্শ এবং স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।
প্রতিমন্ত্রী আজ রোববার, ১৬ আগস্ট সকালে রাজধানীর বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে এটি আয়াজন করে বাংলা একাডেমি।
বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বাঙালি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রাণের যোগ। ১৯৭১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমি আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী অমর একুশের অনুষ্ঠানমালায় প্রধান অতিথি ছিলেন সত্তরের নির্বাচনে বিজয়ী বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন বঙ্গবন্ধু এই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সমবেত সুধীর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘আপনারা বুকে হাত দিয়ে বলেন, আপনারা ভাষার জন্য কি করেছেন? দেশের জন্য আপনারা কি করেছেন?… আমরা যেদিন ক্ষমতায় যাবো সেদিন থেকে বাংলা রাষ্ট্রভাষা হবে।’ একইভাবে ১৯৭৪ সালে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু জাতীয় সাহিত্য সম্মেলন উদ্বোধন করেছিলেন যেখানে বিশ্বের খ্যাতনামা কবি-লেখক-পণ্ডিতগণ বাংলা একাডেমিতে সমবেত হয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সংবাদ শুনে জীবনে সবচেয়ে বেশি মর্মাহত ও শোকাহত হয়েছিলেন উল্লেখ করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৫ সালের ৪ঠা নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রথম প্রতিবাদ মিছিলে আমি ময়মনসিংহ হতে ট্রেনে ঢাকায় এসে যোগদান করি। একইভাবে ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা যখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে তৎকালীন সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন সৌভাগ্যক্রমে সেখানেও আমি উপস্থিত ছিলাম।’
বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
অনুষ্ঠানে ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে (১৯৭৮ সালের ২৫ জুলাই) কবি কামাল চৌধুরী রচিত ‘টুঙ্গিপাড়া গ্রাম থেকে’ শীর্ষক কবিতা পাঠ করে শোনান ড. মো. শাহাদাত হোসেন নিপু।
আলোচনা সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন ও কর্ম নিয়ে বাংলা একাডেমি কর্তৃক ১০০টি গ্রন্থ প্রকাশের অংশ হিসাবে ইতোমধ্যে প্রকাশিত ২৬টি গ্রন্থের আনুষ্ঠানিক প্রকাশনার উদ্বোধন করেন।
পরে প্রতিমন্ত্রী বাংলা একাডেমি আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। বাংলা একাডেমি চত্বরে এই বৃক্ষরোপন করা হয়।