অবশেষে সেই জট খুলেছে। আজ মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতেই পাকিস্তান যাচ্ছে। যেখানে শুধু তিনটি টি-টোয়েন্টি আর দুটি টেস্ট ম্যাচই নয়, একটি ওয়ানডেও খেলবে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা।
পিসিবি এবং বিসিবি থেকে যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে তাতে দেয়া আছে, বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা তিন দফায় যাবে পাকিস্তান। প্রথম দফায় জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, এরপর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে একটি টেস্ট খেলতে যাবে বাংলাদেশ দল। এরপর পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হবে পিএসএল। এ টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পর তৃতীয় দফায় এপ্রিলে পাকিস্তান সফরে যাবে বাংলাদেশ। তখন একটি ওয়ানডে এবং বাকি টেস্ট খেলে আসবে টাইগাররা।
পিসিবির সেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিরোনামই দেয়া হয়েছে, ‘পিসিবি এবং বিসিবি আসন্ন সিরিজের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে।’ সেখানে বিস্তারিত অংশে লেখা হয়েছে, আইসিসি ফিউচার ট্যুর প্ল্যানের (এফটিপি) অংশ হিসেবেই পাকিস্তান সফরে আসার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বিসিবি তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির শিরোনাম দিয়েছে, ‘বাংলাদেশ তিনটি টি-টোয়েন্টি, একটি ওয়ানডে এবং দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে পাকিস্তান।’
পিসিবি চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে বিসিবির বৈঠকের মধ্যস্থতা করেন আইসিসি চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর।
নতুন সূচি অনুসারে বাংলাদেশ লাহোরে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে ২৪ থেকে ২৭ জানুয়ারির মধ্যে। এরপর ১০ দিনের একটা লম্বা বিরতি। তারপর ৭ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি রাওয়ালপিন্ডিতে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান।
এই অংশ শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশ দল ফিরে আসবে দেশে। পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হবে পিএসএল। ২২ মার্চ লাহোরে পিএসএল শেষ হওয়ার পর আবারও পাকিস্তান যাবে টাইগাররা। ৩ এপ্রিল করাচি একমাত্র ওয়ানডে এবং ৫ থেকে ৯ এপ্রিল বাংলাদেশ খেলবে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ।
বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের উদ্বৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘আমি পিসিবিকে ধন্যবাদ দিতে চাই, আমাদের অবস্থান অনুধাবন করার জন্য। আমরা খুশি এ কারণে যে, দুই পক্ষের মধ্যে একটা গ্রহণযোগ্য সমাঝোতা করা সম্ভব হয়েছে। আইসিসির এফটিপি বাস্তবায়নে আমরা কতটা আন্তরিক, সেটা এই সমঝোতায়ই বোঝা যাচ্ছে।’
প্রসঙ্গত শুরুতে বিসিবির দাবি ছিল, শুধু তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার ব্যাপারে। এরপর বিসিবি প্রস্তাব দিয়েছিল, প্রথমে টি-টোয়েন্টি খেলতে যাবে বাংলাদেশ দল। এরপর পরিস্থিতি বুঝে পরে টেস্ট খেলতে যাবে টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত বিসিবির সেই চাওয়াই পূর্ণ হলো। তাও দুই দফায় নয়, তিন দফায় সিরিজের সূচি নির্ধারণ করে।
কারণ ২৭ জানুয়ারি লাহোরে শেষ টি-টোয়েন্টি খেলে ফিরে আসবে বাংলাদেশ দল। ১০ দিন বিরতি দিয়ে আবারও পাকিস্তান যাবে টাইগাররা। তখন রাওয়ালপিন্ডিতে খেলবে একটি টেস্ট। এরপর আবারও মার্চের শেষ কিংবা এপ্রিলের শুরুতে তৃতীয়বার পাকিস্তান যাবে বাংলাদেশ দল। তখন ৩ এপ্রিল একটি ওয়ানডে এবং ৫-৯ এপ্রিল দ্বিতীয় টেস্ট খেলবে টাইগাররা।
পিসিবি চেয়ারম্যান এহসান মানি বলেন, ‘আমি খুবই খুশি যে, আমরা এ সফরের জট খুলতে সক্ষম হয়েছি। এটা দুটি ক্রিকেট জাতির জন্যও একটা গর্বের বিষয়। আমি আইসিসি চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহরকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। তিনি এই দুই দেশের মধ্যে ক্রিকেটকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে দারুণ নেতৃত্ব দিয়েছেন।’
পিসিবি প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান বলেন, ‘এটা দুই দেশের জন্যই উইন-উইন প্রাপ্তি। এই সিরিজ নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল, সেটা আপাতত কেটে গেছে। আমরা এখন ম্যাচগুলো যেন খুব সুন্দরভাবে আয়োজন করা সম্ভব হয়, সে ব্যাপারে কাজ শুরু করতে পারি। তিনবার পাকিস্তান সফরে আসবে বাংলাদেশ। এটা হয়তো তাদের খুব প্রশান্তি দেবে যে, পাকিস্তান এখন ক্রিকেট খেলার জন্য নিরাপদ।’