আজ ২৪ আগস্ট ইয়াসমিন ট্র্যাজেডি দিবস আজ। ১৯৯৫ সালের এই দিনে কয়েক পুলিশ সদস্যের হাতে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন কিশোরী ইয়াসমিন।
১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট ভোরে ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁওগামী একটি বাসের সুপারভাইজার ইয়াসমিনকে দিনাজপুরের দশমাইল মোড়ে নামিয়ে দেয়। সঙ্গে সেখানকার এক চায়ের দোকানদারকে বলে দেয়, সকালে যেন তিনি কিশোরী ইয়াসমিনকে দিনাজপুর শহরগামী একটি বাসে তুলে দেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর সেখানে পৌঁছে পুলিশের একটি টহল দল। তারা দিনাজপুর শহরে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে জোর করে ইয়াসমিনকে তাদের গাড়িতে তোলে। এরপর তারা পাশের একটি স্কুলে নিয়ে ইয়াসমিনকে ধর্ষণের পর হত্যা করে এবং লাশ সড়কের পাশে ফেলে চলে যায়।
এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে দিনাজপুরের মানুষ। বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। এতে নিহত হয় সাতজন। এর পর থেকে প্রতিবছর ২৪ আগস্ট সারা দেশে পালিত হয় প্রতীকী ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে।
ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় এএসআই মঈনুল, কনস্টেবল আব্দুস সাত্তার ও পুলিশের পিকআপ ভ্যানের চালক অমৃত লাল বর্মণের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে।
ইয়াসমিনের মা শরীফা বেগম বলেন, ‘দিনাজপুরের মানুষ এক হয়ে রাজপথে নামায় ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার বিচার হয়েছে।’
দিনাজপুর মহিলা পরিষদের সভাপতি কানিজ রহমান বলেন, ‘এ আন্দোলন আমরা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। এ আন্দোলন কেবল ইয়াসমিন ট্র্যাজেডির জন্য নয়; সকল নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে এ আন্দোলন।’
কর্মসূচি : প্রতিবছর দিনাজপুরে ইয়াসমিন ট্র্যাজেডি দিবস পালিত হয়। এবারের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—শহরের প্রতিটি ভবন ও ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাচ ধারণ ও শোকযাত্রা। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও পৃথক কর্মসূচি পালন করবে। মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছেন ইয়াসমিনের মা শরীফা বেগম। দিবসটি পালন করবেন দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপালও, যিনি ইয়াসমিন ট্র্যাজেডিতে রাজপথে সরব ছিলেন।
এইচএ/রাতদিন