‘আমরা আমাদের ছেলের মরদেহ ফেরত চাই’

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি বাবলুর মরদেহ ফেরত চান স্বজনরা। মরদেহ দেশে এনে দাফন করার জন্য বাবা-মা ও স্ত্রী বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিচ্ছেন। কিন্তু আজ সোমবার ঘটনার ৭ দিন হতে চললেও তারা এখনও মরদেহ ফেরতের কোনো কিনারা করতে পারেননি।

নিহতের স্বজনরা বলছেন, বিএসএফ বাবলুকে গুলি করে মেরেছে। তাই বলে কি আমরা তার মরদেহ ফেরত পাব না।

আজ সোমবার সকালে সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই আকুতি জানান বাবলু মিয়ার বাবা নুর মোহাম্মদ ও মা আছিয়া খাতুন। তারা বলেন, ‘আমরা আমাদের ছেলের মরদেহ ফেরত চাই, আমাদেরকে মরদেহ এনে দেয়ার ব্যবস্থা করা হোক।’

তাদের অভিযোগ, ৫১ বিজিবির কাছে আমরা এ নিয়ে কথা বলার জন্য বার বার ধরনা দিয়ে কোনো সুযোগ পাননি। ফলে মরদেহ ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে গতকাল রোববার বিকালে ৫১ বিজিবির কমান্ডিং অফিসারের (সিও) কাছে লিখিত আবেদন করেছেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) মাধ্যমে।

নিহত বাবলুর ওই উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন গ্রামে।

গত মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর সকালে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা ও লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম সীমান্তবর্তি চরে বিএসএফের গুলিতে বাবলু মিয়া (২৪) নিহত হন।

এ সময় বাবলুর সঙ্গে থাকা চৌদ্দ বছরের বালক সাইফুল ইসলাম আহত হয়। বাবলুর লাশসহ আহত বালককে বিএসএফ ভারতে নিয়ে যায়।

আহত বালক ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়শিঙ্গেশ্বর গ্রামের গোলজার রহমানের ছেলে।

সাইফুলকে ফেরত পেতে তার স্বজনরা একইভাবে ধরনা দিচ্ছে।

এদিকে নিহত বাবলুর স্ত্রী রজিফা স্বামীর জন্য আহাজারি করছে। আট মাস আগে বিয়ে হওয়া এই নারী ঠিকমতো সংসার জীবন শুরুই করতে পারেনি। স্বামীর হঠাৎ এভাবে মৃত্যু সে মেনে নিতে পারছে না। অল্প বয়সে আজ তাকে বিধবা হতে হল।

ভারত থেকে বাবলুর লাশ নিয়ে আসার দাবিতে বাবা, মা, স্ত্রী, ভাই-বোন পাগলের মতো জনপ্রতিনিধি, বিজিবি, প্রশাসনের বিভিন্ন লোকজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, বাবলুর লাশ ও আটক সাইফুল ইসলামকে ফেরত আনার জন্য ৫১ বিজিবি কাছে বাবলুর জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়।

তবে ৫১ বিজিবির কাছে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

একটি সূত্র জানিয়েছে, ময়নাতদন্ত শেষে বাবলুর বাবলুর মরদেহ ভারতের কোচবিহার হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

এবি/রাতদিন