মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন বাহিনী প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ বিমানের সমস্যা দূর করা হবে। কোনো দুর্নীতি হলে মেনে নেওয়া হবে না।
আপনারা যখন বিদেশে যান, তখন ঠিক যেভাবে এই নিরাপত্তাটা নিশ্চিত করা হয়, ঠিক সেইভাবে সবাইকে সেটা মেনে নিতে হবে। সেখানে কেউ কোনো বাধা দিতে পারবেন না। আর যদি কেউ এক্ষেত্রে বাধা দেন, তাহলে ভবিষ্যতে আর বিমানে চড়াই বন্ধ হয়ে যাবে। অন্তত আমি সেটা করব।
‘আর একটা কথা সবাই মনে রাখবেন, আমার সারাদিন আর কোনো কাজ নেই, আমি সারাদিন দেশের কাজ করি। দেশের কোথায় কী হয় সেটা টুকটাক খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। নজরদারি বাড়িয়ে দেই। কাজেই অনিয়ম বা ব্যত্যয় ঘটাতে গেলে সাথে সাথে আমার কাছে কিন্তু খবরটা চলে আসে। এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।’
শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ ও বাংলাদেশ বিমানের নতুন ড্রিমলাইনার অচীন পাখি ও সোনার তরী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি আমার জীবন বাংলাদেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছি। আমি আমার পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। বাংলাদেশ যে উন্নত হতে পারে গত দশ বছরে আমরা তা প্রমাণ করেছি।
১৯৯৬ সালের আগে ঢাকা এয়ারপোর্টের কথা যদি চিন্তা করেন, বোর্ডিং ব্রিজসহ কোনকিছুই ছিল না। বিমানের বহরে যে প্লেন ছিল তা দিয়ে ঝর ঝর করে পানি পড়ত। তোয়ালে, টিস্যু দিয়ে বন্ধ করতে হত। কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল না। দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা ছিল। আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলাম, কাজ শুরু করলাম। তবে উদ্বোধন করে যেতে পারিনি। ২০০৮ সালে যখন ক্ষমতায় আসলাম পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে কাজ শুরু করলাম। ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমানে অনেক সমস্যা ছিল। এ সমস্যাগুলো একে একে সমাধান হচ্ছে। এখন অ্যাপসটা উদ্বোধন করলাম। টিকিট বুকিংসহ সবকিছু এখানে করতে পারবে। আমাদের বিমানের নিজস্ব কোনো কার্গো প্লেন নেই। কাজেই কার্গো প্লেন আমাদের প্রয়োজন। থার্ড টার্মিনালের সাথে অত্যন্ত আধুনিক কার্গো ভিলেজ হবে। তাতে আমাদের মালামাল প্রেরণ করা, এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যবসা সেগুলোও অনেক বেশি সুবিধা হবে। ভবিষ্যতে আমরা দুটি কার্গো প্লেন ক্রয় করব। কারণ কার্গো ছাড়া বিমান লাভজনক হবে না।
বিমানের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা বিশেষভাবে নজর দিয়েছি। বিদেশি যারা আসেন বা আমাদের যারা বিদেশে কাজ করে যাদের অর্থে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি। অনেক সময় তাদের হয়রানি করা হয়। এসব অবশ্য এখন কিছুটা বন্ধ হয়েছে। আমি চাই তাদের যেনো কোনোভাবে হয়রানি করা না হয়। নিরাপত্তার যে নিয়মাবলি আছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সকল যাত্রীকে তা মেনে নিতে হবে। এখানে সংসদ সদস্যরা আছেন, বাহিনী প্রধান আছেন। আপনারা বিদেশে যান, সেখানে আপনাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়। সে ব্যবস্থা এখানেও করা হবে। কেউ বাধা দিতে পারবেন না।