আলাদা ঘর নেই, গ্রাম বাঁচাতে গাছেই কোয়ারেন্টিন!

করোনাভাইরাসের সংক্রমন রোধে কোয়ারেন্টিন এখন অনেকের কাছে বেশ পরিচিত শব্দ। বলা হচ্ছে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা বা বিদেশফেরতদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিন বা বাড়িতে থাকতে হবে। তবে এবার কোয়ারেন্টিনে ‍যুক্ত হয়েছে বাড়ির বদলে গাছ! যাকে ট্রি কোয়ারেন্টিন বলা হচ্ছে।

অভিনব এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পুরুলিয়া জেলার বলরামপুর থানার অযোধ্যা পাহাড় লাগোয়া ভাঙ্গিডিহ গ্রামে। লকডাউনের কারণে চেন্নাই থেকে গত সোমবার গ্রামে ফেরা সাত আদিবাসী শ্রমিক নিজেদেরকে ট্রি কোয়ারেন্টিনে রেখেছেন।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গ্রামে তাঁদের এক কামরার মাটির ঘর থাকলেও পরিবারের সংক্রমণের কথা চিন্তা করে সোমবার থেকে তাঁরা স্বেচ্ছায় গাছেই রয়েছেন। গ্রামের বাইরের একটি বট গাছ ও দুটি আমগাছে তাঁরা কোয়ারান্টিনে রয়েছেন। গাছের ডালের মধ্যে তাঁরা খাটিয়া পেতে মশারি টাঙিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা রান্না করে গাছের নীচে রেখে যান। তাঁরা খাবার খেয়ে বাসনপত্র ধুয়ে রেখে দেন।

ছবি: সংগৃহীত

তাঁদের একজন বিজয় সিংহ জানান, শনিবার চেন্নাই থেকে ট্রেনে চেপে রবিবার খড়গপুরে ফিরি। ডাক্তাররা তাঁদের দেহে করোনার কোনও লক্ষণ পাননি। তবে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেকারণেই সোমবার গ্রামে ফিরলেও গ্রামের ভিতরে প্রবেশ করেননি বলে জানান তিনি।

দলের আরেকজন বিজয় সিং সর্দার জানান, বন্ধুদের মাধ্যমে সাতটি খাটিয়া ও মশারি যোগাড় করেছি। হাতির হানার ভয়ে গাছের ডালে কোয়ারান্টিনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এই সাতজনের সুরক্ষার কথা ভেবে গ্রামবাসীদের পক্ষে রাত পাহারার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এক গ্রামবাসী জানান, ওঁদের হিংস্র বন্যজন্ত ও সাপের হাত থেকে বাঁচাতে প্রতিদিন একজন করে গ্রামবাসী তীর ও ধনুক নিয়ে রাত পাহারা দিচ্ছেন।

অবশ্য এভাবে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটানোর ঘটনায় তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে। সরকারিভাবে অনেক জায়গায় কোয়ারেন্টিন সেন্টার খোলা হলেও এ গ্রামে তা নেই।

স্থানীয় বিডিও ধ্রুবপদ শান্ডিল্য অবশ্য জানান, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তাঁদের সাহায্যের কথা ভাবা হচ্ছে।

এবি/রাতদিন