এবার মুসলমানদের উৎসবের নাম-গন্ধও মুছে গেল ভারত থেকে

আর সব উৎসবের নাম থাকলেও ভারতের জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন (এনপিআর) থেকে এবার বাদ গেল মুসলিমদের উৎসবের নাম-গন্ধ। আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, হিন্দু, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের উৎসবের তালিকা রয়েছে। রয়েছে গান্ধী জয়ন্তী, স্বাধীনতা দিবস বা ইংরেজি নববর্ষের উল্লেখও। তবে নেই শুধু মুসলিমদের কোন ধর্মীয় উৎসবের উল্লেখ।

দেশটির এনপিআর-এর সদ্য প্রকাশিত ম্যানুয়ালে এই বিষ্ময়কর ধর্মীয় বৈষম্যের বিষয়টি নজরে আসতেই শুরু হয়েছে সমালোচনা।

পত্রিকাটি বলছে, ২০১১ সালে মনমোহন সিংয়ের সময় যে এনপিআর ম্যানুয়াল প্রকাশিত হয়েছিল সেখানেও কোন নাম ছিল মুসলিমদের কোন ধর্মীয় উৎসবের।

৩৭ পাতার এনপিআর ম্যানুয়ালের ৩২ নম্বর পাতায় অ্যানেক্সার ৫-এ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসবের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে হিন্দু ছাড়াও বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-শিখ ইত্যাদি বিভিন্ন ধর্মের উৎসবের সময়কাল উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু জনসংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা মুসলিমদের কোনও উৎসব বা স্মরণীয় দিন বা তিথির উল্লেখ নেই।

কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রথম লোকায়ুক্ত সমরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘দেশের কোনো ধর্ম নেই। রাষ্ট্র ধর্ম নিরপেক্ষ। এখানে যেন ফের একবার বিভাজন হয়ে যাচ্ছে। সংবিধানে জাত-পাতের বিষয়ে উল্লেখ নেই। এনপিআরের ম্যানুয়ালে কেন মুসলিম ধর্মের উৎসবের উল্লেখ থাকবে না? অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।’

এরপিআর-এর সঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) আইনের মিলও খুঁজে পাচ্ছেন কেউ কেউ। তাদের মতে ওই আইনে (২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বর বা তার আগে) আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে যাঁরা এ দেশে এসেছেন, তারা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি বা খ্রিস্টান হলে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবেন। মুসলমানদের এ ক্ষেত্রে বাদ। ফলে ধর্মীয় বিভাজন করা হয়েছে বলে মনে করছে বিরোধীরা।

২০২০ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হতে যাচ্ছে এনপিআর কর্মসূচি।

জেএম/রাতদিন