এলো নবান্নের খুশিতে মেতে ওঠার দিন

এসেছে হেমন্ত। এসেছে নবান্নের খুশিতে মেতে ওঠার দিন। হেমন্তের আগমন জানান দিচ্ছে নবান্নের খুশির বার্তা।

নতুন ধান আসছে ঘরে।  উঠান ভরে উঠছে ধানের আটিতে। সে কি আনন্দ, সে কি উল্লাস। নতুন ধানের চাল দিয়ে হবে পিঠে, পায়েস আর রকমারী বিলাসী খাবার।  কৃষাণ-কৃষাণীরা ব্যস্ত হয়ে উঠেন । আপনজনদের আগমনে সরব হয়ে উঠে বাড়ি। পাড়ায় পাড়ায় চলে নবান্ন উৎসব । গ্রাম বাংলায় নতুন এক আবহের সৃষ্টি হয়।

নবান্ন উৎসবের সাথে মিশে আছে বাংলার বাঙালিয়ানার হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য । প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালি জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে নবান্নের উৎসবে মেতে ওঠে ।

অগ্রহায়ণের শুরুতেই আমাদের গ্রাম বাংলায় চলে নানা উৎসব, নানা আয়োজন। নতুন ধান কাটা আর সেই সাথে প্রথম ধানের অন্ন খাওয়াকে কেন্দ্র করে পালিত হয় এই নবান্ন উৎসব । বার মাসে তের পাবর্ণ- এ যেন সত্যি হৃদয়ের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করার উৎসব।

হেমন্তের আগমনে ফসলের মাঠ ছেয়ে যায় হলুদের আবিরে । এই সুন্দরম শোভা দেখে কৃষকের মন আনন্দে নেচে ওঠে। নতুন ফসল ঘরে ওঠার কি এক অনাবিল আনন্দ। প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালির জীবনে অগ্রহায়ণ মাস নতুন বার্তা বয়ে আনে ।

নতুন ধানের চাল দিয়ে তৈরি করা হয় পিঠা পায়েস, ক্ষীর,সেমাইসহ হরেক রকম খাবার। সুস্বাদু খাবারের গন্ধে ভরে ওঠে চারপাশ। সোনালি ধানের প্রাচুর্য আর বাঙালির বিশেষ অংশ নবান্ন ঘিরে অনেক কবি-সাহিত্যিকের লেখায় উঠে এসেছে প্রকৃতির চিত্র।

অগ্রহায়ণ এলেই কৃষকের মাঠজুড়ে ধানকাটার ধুম পড়ে যায়। অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটান এ সময়ে কৃষাণ-কৃষাণীরা। ধান ভাঙার গান ভেসে বেড়ায় বাতাসে, ঢেঁকির তালে মুখর হয় বাড়ির আঙিনা। অবশ্য যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় এখন আর সেই ঢেঁকিতে ধান ভানার শব্দ শোনা যায় না। তার পরও নতুন চালের ভাত নানা ব্যঞ্জনে মুখে দেয়া হয় আনন্দঘন পরিবেশ।

হাজার বছরের পুরনো এই  নবান্ন উৎসবটি যুগ যুগ ধরে একইভাবে পালন হয়ে আসছে। নবান্ন উৎসবে গ্রামগঞ্জে আয়োজন করা হতো গ্রামীণ মেলার। এসব মেলায় শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের ঢল নামতো এক সময়। গ্রামীণ মেলা এখন  গ্রামে সীমাবদ্ধ নেই।  শহরের মানুষ এখন নবান্নের স্বাদ নিয়ে থাকে ভিন্ন আঙ্গিকে ।

এসকে/রাতদিন