করোনাভাইরাস মোকাবেলায় পুরো পৃথিবী সম্মিলিতভাবে ও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রতিরোধের উপায় খুঁজছে। সম্প্রতি কয়েকটি টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান তাদের তৈরি করোনা টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে জানিয়েছে। বলা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য ডিসেম্বরেই টিকার প্রয়োগ শুরু করবে। সেই সাথে টিকাগুলোর সম্ভাব্য বাজারদর সম্পর্কেও ধারণা মিলছে।
যেমন হতে পারে করোনা টিকার দাম
মডার্না
যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি মডার্না ইনকরপোরেশনের দাবি, তাদের তৈরি টিকা করোনা ঠেকাতে ৯৪ দশমিক ৫ শতাংশ কার্যকর। ক্রয়াদেশের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে সরকারের কাছে প্রতি ডোজ করোনা টিকার দাম ২৫ থেকে ৩৭ ডলার করে রাখবে মডার্না। মডার্নার প্রধান নির্বাহী স্টিফেন ব্যানসেল জার্মানির একটি সাপ্তাহিককে এ কথা জানিয়েছেন। তবে উৎপাদন বেশি হলে দাম কমে আসতে পারে।
ফাইজার–বায়োএনটেক
ফাইজার দাবি করে, তাদের টিকা করোনা ঠেকাতে প্রায় ৯৫ শতাংশ কার্যকার। ফাইজার-বায়োএনটেক জানিয়েছে, তাদের তৈরি টিকার প্রতি ডোজের দাম পড়তে পারে ২০ ডলার করে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি বলছে, সেটি সত্যি হলে মডার্নার চেয়ে ফাইজারের টিকার দাম কম হতে পারে।
স্পুতনিক ফাইভ
রাশিয়া ঘোষণা দিয়ে জানায় যে, তাদের তৈরি স্পুতনিক ফাইভ টিকা ৯২ শতাংশ কার্যকর। তবে রাশিয়ার করোনা টিকার কার্যকারিতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব সন্দিহান।
স্পুতনিক ফাইভ টিকার অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে গতকাল রোববার বলা হয়েছে, মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও মডার্নার চেয়ে রাশিয়ার করোনা টিকার প্রতি ডোজের দাম অনেক কম পড়বে। তবে কত কম পড়বে, তা এখনো জানানো হয়নি।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে পারে। সদ্যই এ খবর পাওয়া গেছে। গবেষকরা বলছেন, বয়স্ক মানুষের দেহে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাসের টিকার প্রতিক্রিয়া ‘উৎসাহব্যঞ্জক’।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার বরাত দিয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, তাদের টিকার প্রতি ডোজের দাম পড়তে পারে ৩ থেকে ৪ ডলার। প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান জানাচ্ছে, অক্সফোর্ডের টিকা অলাভজনকভাবে বাজারজাত করা হবে এবং একই সঙ্গে বিশ্বের সব প্রান্তে প্রয়োজন অনুযায়ী পৌঁছে দেওয়া হবে এ টিকা।
ভারতের টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ডের টিকা উৎপাদন করবে বলে জানিয়েছে। ওই টিকার দুই ডোজের দাম পড়বে সর্বোচ্চ ১ হাজার রুপি।
জনসন অ্যান্ড জনসন
এই প্রতিষ্ঠানের তৈরি টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে এখনো স্পষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি। তবে টিকাটি এক ডোজের হওয়ার কথা। সেদিক থেকে অন্যান্য টিকার তুলনায় জনসনের টিকা একটু আলাদা। এরই মধ্যে গত সেপ্টেম্বরে ৬০ হাজার মানুষের ওপর এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়ে গেছে।
সিএনবিসির খবরে জানা গেছে, প্রতি ডোজের দাম পড়তে পারে ১০ ডলার করে। এরই মধ্যে জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো দেশ আগাম আগ্রহ দেখিয়েছে।
আরআই/রাতদিন
উত্তরের মুখ