ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ওয়ালটনের মোবাইল সেক্টরের টেরিটরি সেলস ম্যানেজার জাকারিয়া বিন হক শুভর মৃত্যু রহস্যের সুষ্ঠু তদন্ত দাবিতে মানববন্ধন ও মৌন মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন শুভ।
আজ শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মৌন মিছিল করেন শুভর বন্ধু, সহপাঠী, স্বজনরা।
এসময় শুভর প্রতিবেশি এ এস এম রাজিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিহতের স্ত্রী ও শাশুড়ির ভূমিকা রহস্যজনক। তারা বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার পর থেকে শুভর পরিবার, বন্ধু কারো সাথেই কোনো ধরণের যোগাযোগ করেনি। তাই আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষিদের বিচার চাই’।
শুভর বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু সাঈদ আল সায়েম বলেন, ‘শুভর গলায় ফাঁসির দাগের বদলে আঙুলের দুটি চিহ্ন ছিল। পাশাপাশি তার স্ত্রী ও স্বজনদের আচরণ পুরোপুরি সন্দেহজনক। শুভকে তারা হাসপাতলেও নিয়ে যায়নি কিন্তু আগেই তার মৃত্যুর খবর ঘোষণা করেছে তার’।
দীপ দাশ নামের আরেক বন্ধু বলেন, ‘শুভ বিতর্ক, খেলাধুলা, সামাজিক-সাংস্কৃতি কর্মকান্ডে জড়িয়ে ছিল সবসময়। এছাড়া ধর্মের প্রতিও তার ছিল দৃঢ় বিশ্বাস। ফলে আমরা বিশ্বাস করি সে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাই আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই’।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
কালীগঞ্জে মানববন্ধন: জাকারিয়া বিন হক শুভ হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবিতে রোববার, বেলা সাড়ে ১১ টায় তুষভান্ডার বাজারে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে এলাকাবাসী। এ কর্মসূচির সাথে তুষভান্ডার ব্যবসায়ী সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন একাত্মতা প্রকাশ করেছে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে সকলকে মানববন্ধনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত জাকারিয়া বিন হক শুভর মৃত্যুতে তার বড়বোন হাসিনা নাজনিন বিনতে হক গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় শুভর স্ত্রী শেহনীলা নাজ ও শাশুড়ি আছমা বেগমসহ অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে।
জানাগেছে, শেহনীলা নাজ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আর তার মা ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল
শুভ সিগারেট খাওয়া নিয়ে কথাকাটাকাটির জেরে ফ্যানের সাথে ওড়না ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তার স্ত্রী ও শাশুড়ি দাবি করলেও তার গত বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর মরদেহ বেডরুমের মেঝেতে পড়ে ছিল। ওই দিন রাতে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। শুক্রবার ময়নাতদন্ত ও ঢাকায় প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন রাতেই তার মরদেহ দাফন করা হয় গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঘণেশ্যাম এলাকার পারিবারিক কবরস্থানে।
এবি/রাতদিন