দিনাজপুরের জোড়া মাথার সেই মনি-মুক্তা এখন ৯ পেরিয়ে

বাংলাদেশে প্রথম অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে জোরা লাগানো শিশুর সফল পৃথকীকরণ করা হয় ৯ বছর আগে। এই সাফল্যের ইতিহাস বীরগঞ্জের জোড়া লাগানো জমজ দুই বোন মনি-মুক্তা। দিনাজপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে বেড়ে উঠা মনি মুক্তা এখন ১০বছরে পা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট নিজ বাড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা হয় মনি-মুক্তার জন্ম দিন। বিকেলে বিদ্যালয় শিক্ষক ও মনি-মুক্তার বন্ধুবান্ধবসহ প্রতিবেশিদের উপস্থিতিতে কেক কেটে জম্ম বার্ষিকী পালন করে পরিবারের লোকজন।

মনি মুক্তা সুস্থ্য এবং ভালো আছে। তারা একে অপরের সাথে খেলা করে সময় কাটায় বলে জানানো হয় পরিবারের পক্ষ ।

দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের শরৎ চন্দ্র পালের পুত্র জয় প্রকাশ পাল। জয় প্রকাশ পালের স্ত্রী কৃষ্ণা রাণী পালের গর্ভে ২০০৯ সালের ২২ শে আগস্ট পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতালে সিজারিয়ান সেকশনে অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে মনি এবং মুক্তা জোরা লাগা অবস্থায় জন্ম নেয়।

পরে রংপুরের চিকিৎসকগণ ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে যমজ বোনকে অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে পৃথক করার পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শ ক্রমে ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারী ঢাকা শিশু হাসপাতালে মনি-মুক্তাকে ভর্তি করা হয়।

অতঃপর ২০১০ সালের ০৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এ আর খানের সফল অপারেশনের মাধ্যমে মনি-মুক্তা ভিন্ন সত্ত্বা লাভ করে। বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস।

মনি-মুক্তার বাবা জয় প্রকাশ পাল জানান, সে সময় গ্রামের মানুষ এটাকে অভিশপ্ত জীবনের ফসল বলে প্রচার করতে থাকে। সমাজের নানা কুসংস্কারে প্রায় এক ঘরে হয়ে পড়ি। সমাজের নানা অপবাদে গ্রামে আসিনি। হতাশার মাঝে স্বপ্ন দেখি মনি-মুক্তাকে নিয়ে। বিভিন্ন চিকিৎসকের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকি তাদের স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য। আমাদের স্বপ্ন বাস্তব হয় ডা. এ আর খানের কারণে। সেই মানুষটির কারণে আমাদের এই দুই সন্তানের নতুন করে বেঁচে থাকা।