দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ২০ জোড়া দরিদ্র ও এতিম যুবক-যুবতীর যৌতুকবিহীন বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর বিকেলে দিনাজপুরের বীরগঞ্জের বটতলী ফয়জিয়া মদিনাতুল উলুম মাদরাসা প্রাঙ্গণে এ বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
বিয়েতে নব দম্পতিদের নতুন পরিবার সাজাতে প্রয়োজনীয় আসবাব ও সাংসারিক জিনিসপত্র দেয়া হয়। যৌতুকের কু-প্রভাব এবং ধর্মীয়ভাবে যৌতুক দেয়া-নেয়ার নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি প্রতিটি ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দিতে এমন আয়োজন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
আগে থেকে সাজিয়ে রাখা মাঠে আনন্দ ঘন মুহূর্তে মানুষ আসেন যৌতুকবিহীন বিয়ে দেখার জন্য। বিকেলে ২০ জোড়া বর ও কনে সাজিয়ে আনা হয় অনুষ্ঠানস্থলে। এ সময় তাদের বিয়ে পড়ান মাওলানা আবেদ আলী। নব-দাম্পতিদের জীবনের সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করে তাদের জন্য দোয়া মোনাজাত করা হয়।
নব দম্পতিদের হাতে সেলাই মেশিন, ছাগল, লেপ-তোশক,আসবাবপত্র, হাড়ি পাতিলসহ প্রয়োজনীয় জিনিস তুলে দেয়া হয়।
আয়োজকরা জানান, এসব বর-কনে এতিম হতদরিদ্র। তাদের বিয়ে দেয়ার সামর্থ্য নেই। তাই বিয়ের এমন আয়োজন করেন তারা । উদ্দেশ্য কনেকে যোগ্য পাত্রের হাতে তুলে দেয়া এবং একই সঙ্গে যৌতুকের ধর্মীয় বিধি-নিষেধ মেনে যৌতুকবিহীন বিয়েতে সাধারণ মানুষের মাঝে এ বার্তা পৌঁছে দেয়া।
বিয়ের এ সুন্দর আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল। এসময় তিনি ২০ জন কনেকে শাড়ি প্রদান করেন।
বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ও ইসলাহুল মুসলিমীন পরিষদ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের তত্ত্বাবধানে বিয়েতে হাজার হাজার উৎসুক জনতার ঢল নামে। আর এ বিয়ের সব তদারকি করেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলিমীন পরিষদ দিনাজপুর প্রতিনিধি মাওলানা আইয়ুব আলী আনসারী।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়ামিন হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম এ খালেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুর ইসলাম নুর ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামিম আলম ফিরোজ, সাতোর ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শেখ, জেলা পরিষদ সদস্য আতাউর রহমান বাবু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়শা আক্তার বৃষ্টিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজক ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ জানান, এ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় তরুণ-তরুণীদের মধ্যে যারা খরচের ভয়ে বৈবাহিক জীবন গঠন করতে পারেন না তাদের জন্যই যৌতুকবিহীন বিয়ের এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া এ ধরনের বিয়ের মাধ্যমে যৌতুকের যে কু-প্রভাব সেটি তুলে ধরা এবং যৌতুক দেয়া কিংবা নেয়া যে ধর্মীয়ভাবে নিষেধ সেটিও জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়াই এ বিয়ের লক্ষ্য।
এসকে/রাতদিন