সমবায় সমিতির নাম ভাঙিয়ে লোভনীয় অফার দিয়ে গ্রামের মানুষের কাছ থেকে ছয় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় এক ব্যাক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃত মামুন হাসান মালিক ওরফে আদম সুফী (৪৫) নীলফামারীর ডোমারের সাহাপাড়ায় ‘ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি’ নামে একটি পরিচালনা করতেন।
ওই সমিতির নামে সহজ-সরল নারীদের সদস্য করে লোভনীয় অফার দিয়ে দুই মাসে ছয় কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মামুন হাসান। পরে সমিতির কার্যালয়ে তালা দিয়ে আত্মগোপনে যান তিনি। তবে গতকাল বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার র্যাব-১৩ রংপুর সদর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আব্দুল্লাহ আল মঈন হাসান।
তিনি জানান, গত নভেম্বর মাস থেকে মামুন হাসান সহযোগীদের নিয়ে ডোমার থানার সাহাপাড়ায় সাবেক কুইন্স কিন্ডারগার্টেনে ঘর ভাড়া নিয়ে ডোমার বাজার ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি নামে ব্যানার লাগিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। এরপর সহজ-সরল নারীদের টার্গেট করে সমবায় সমিতির মাধ্যমে লোভনীয় অফার দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া শুরু করেন মামুন হাসান ও তার সহযোগীরা।
সমবায় সমিতির মাধ্যমে কয়েকজন নারী সদস্য প্রাথমিকভাবে তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মূল টাকাসহ লভ্যাংশ পেলেও এলাকার অধিক সংখ্যক নারী সহায়-সম্বল বিক্রি করে সমিতির সদস্য হন। এভাবে সমবায় সমিতির আড়ালে নারীদের কাছ থেকে দুই মাসে ছয় কোটি টাকা সংগ্রহ করে প্রতারক চক্রটি। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ওই টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সমিতির কার্যালয় বন্ধ করে পালিয়ে যান মামুন হাসান ও তার সহযোগীরা।
তাদের এমন প্রতারণার শিকার হয়ে ভুক্তভোগীরা বিভিন্নভাবে সমস্যায় পড়েন। কয়েকজন নারী তালাকপ্রাপ্ত হন। এ ঘটনায় সমিতির এক নারী সদস্য হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
মেজর মঈন হাসান আরও বলেন, প্রতারণার শিকার সমিতির প্রায় শতাধিক নারী সদস্য গত ২০ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন। সেই সঙ্গে নীলফামারীর ডোমার থানায় গত ২৪ জানুয়ারি চার প্রতারকের নামে মামলা করেন। একই সঙ্গে র্যাব-১৩-এর কাছে একটি অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীরা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন মামুন হাসান। তার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তার করা হবে বলেও জানান র্যাবের ওই কর্মকর্তা।
এইচএ/রাতদিন