বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছেন কানাডার আদালত। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে কূতনৈতিক সূত্র।
গত মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর কানাডার ফেডারেল আদালত বাংলাদেশের পক্ষে এ রায় দেন বলে সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
বিচারক জেমস ডব্লিউ ওরেইলি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, নূর চৌধুরীর অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশে জনস্বার্থের ব্যাঘাত ঘটবে না। সুতরাং তার বিষয়ে বাংলাদেশকে তথ্য না দেয়ার সিদ্ধান্ত কানাডা সরকারকে পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
কিন্ত এর আগে কানাডা সরকার বরাবরই দেশটিতে অভিবাসিত নূর চৌধুরীর বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে আসছিল।
কানাডার আইন অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কাউকে প্রত্যর্পণে বাধা থাকায় সে দেশের সরকার জনস্বার্থ রক্ষার্থে নূর চৌধুরীর বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করছিল না।
মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো কানাডা।
এই রায়ের পর, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এই খুনিকে দেশে ফেরানোর চেষ্টায় এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ।
আওয়ামী লীগ সরকার সর্বদাই চেষ্টা করে আসছিল, মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক এ সেনা কর্মকর্তাকে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করতে। জাতির পিতার খুনিদের একজন কীভাবে কানাডায় বসবাস করছেন, সেই অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য দেশটির সরকারের কাছে চেয়ে আসছিল বাংলাদেশ।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে আইন করে বন্ধ করে দেয়া বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ খোলে। এ নিয়ে মামলার পর বিচার শুরু হলেও বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় যাওয়ার পর মামলার গতি ধীর হয়ে যায়।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এলে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে দণ্ডিত পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, মহিউদ্দিন আহমদ (ল্যান্সার), একে বজলুল হুদা ও একেএম মহিউদ্দিনকে (আর্টিলারি) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়।
কিন্তু মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খন্দকার আবদুর রশিদ, এএম রাশেদ চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন খান পলাতক থেকে যান।
তাদের মধ্যে নূর কানাডায় এবং রাশেদ যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। বাকিদের অবস্থান এখনও শনাক্ত হয়নি। সবাইকে দেশে ফেরানোর চেষ্টায় ইন্টারপোল থেকে রেড নোটিশ জারি করা হলেও তাতে কোনো সুফল আসেনি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিপদগামী দল স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে তার ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাসভবনে হত্যা করে খুনিরা।
শান্ত/রাতদিন