বাংলাদেশে ৩লাখ ৭০ হাজার হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ খ্রিস্টানকে গুম করা হয়েছে- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে করা বাংলাদেশী এক নারীর এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন দেশটির বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশি নারী সংখ্যালঘুদের নিয়ে যে তথ্য উপস্থাপন করেছেন তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার।
শুক্রবার, ১৯ জুলাই বিকেলে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশি নারী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সঠিক নয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে বেড়ানোর কথা জানিয়ে মিলার বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।
১৭ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে দেখা করেন চীন, তুরস্ক, কোরিয়া, মিয়ানমারসহ বিশ্বের ১৭টি দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা। সেই সাক্ষাৎকারে অংশ নেন বাংলাদেশের প্রিয়া সাহা। তাদের প্রত্যেকেই ট্রাম্পকে তাদের নিজ দেশের দুর্ভোগের কথা বলছিলেন। সেখানেই বাংলাদেশ থেকে যাওয়া নারী ট্রাম্পকে বলেন, তার জমি জমা কেড়ে নিয়েছে বাংলাদেশি মুসলিমরা, তার ঘরবাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তাই তিনি ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন।
ওই নারীর বক্তব্যের পর দেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। রীতিমতো নেটিজেনরা ওই নারীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন। তারা ট্রাম্পকে হ্যাশ ট্যাগ, মেনশন করে জানাচ্ছেন ওই মহিলা মিথ্যে কথা বলেছেন। তবে কেন ওই নারী এমন কথা বললেন তা জানা যায়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গণমাধ্যম পুরো অনুষ্ঠানটি ফেসবুকে লাইভ করার কারণে ভিডিওটি সকলের সামনে চলে আসে।
ওভাল অফিসে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সেই নারী ট্রাম্পকে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। সেখানে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ খ্রিস্টানকে গুম করা হয়েছে। এখনো সেখানে ১৮ মিলিয়ন সংখ্যালঘু জনগণ রয়েছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ত্যাগ করতে চাই না। আমি আমার ঘর হারিয়েছি, আমার জমি নিয়ে নিয়েছে, আমার ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে কিন্তু সেসবের কোনো বিচার নেই।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প জিজ্ঞেস করেন কারা এসব করছে? বাংলাদেশি ওই নারী বলেন, ‘সবসময় উগ্রবাদী মুসলিমরা এই কাজ করছে। সবসময় তারা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে এই কাজ করে।’
এরপরই বিষয়টি টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে ওই মহিলার নাম প্রিয়া সাহা। তিনি বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়দানকারী।
জানা গেছে, প্রিয়া সাহা মহিলা ঐক্য পরিষদ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, উনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়ন করতেন, রোকেয়া হলে থাকতেন। এখন একটি এনজিও আছে ওনার। বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য গতবছর তাকে মহিলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়, বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার নাটক করে প্রচুর বিদেশি ফান্ড কালেক্ট করেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি চরবানিরী, মাটিভাঙ্গা, নাজিরপুর, পিরোজপুর।
প্রিয়ার স্বামী মলয় সাহা সহকারী উপপরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের দুই মেয়ে কয়েক বছর ধরে আমেরিকায় বসবাস করছেন। কিছুদিন পূর্বে প্রিয়া সাহা আমেরিকায় যান।
জেএম/রাতদিন